শ্রীমঙ্গলে ৩০টি পরিবার পানিবন্দী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

12

শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
পানি চলাচলের রাস্তায় বাঁধ দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে ভূনবীর ইউনিয়নের শাসন ইলামপাড়া গ্রামের ২৫-৩০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
বৃষ্টির পানি জমে বাড়িঘর, ফসলী জমি এবং একমাত্র সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে নিচু সড়ক ও ফসলী জমি কোমর পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় চলতি আমন চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ গ্রামের রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করা মানুষজন, শাসন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দশরথ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে মারাত্মকভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সোমবার বিকেলে সরজমিনে গ্রামটি ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতার কারণে কোন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি।
স্থানীয় এক ব্যক্তি অবৈধভাবে বালু তোলার সুবিধার জন্য তার জমিসহ সরকারি খাস জমি একত্রে বাঁধ দিয়ে রেখেছে। ৩ মাস পুর্বে এই বাঁধ নির্মাণ করে বালু উত্তোলন করে আসছেন। ফলে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় আশপাশের ফসলী জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়িঘরে পানি জমে থাকে। জলাবদ্ধতার কারণে গ্রামের একটি কবরস্থানও পানির নিচে ডুবে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ঐ ব্যক্তি বর্ষার শুরুতেই বাঁধ অপসারণ করার কথা বললেও বাঁধ অপসারণ করেনি। বিশেষ করে জলাবদ্ধতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ায় মারাত্মক সমস্যা হয়। কারণ এ সড়ক দিয়েই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ঢুকে এবং বের হয়। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে চায়না। ইলামপাড়া গ্রামের স্কুলের পাশে প্রায় ২০টি পরিবার আছে। জলাবদ্ধতার কারণে তাদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ে আসতে তাদের ভালো লাগে না। কারণ, বিদ্যালয়ে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় তারা নিজেরা পানি সরানোর চেষ্টা করে। তাতেও কাজ হয়না। তারা বৃষ্টির পর দ্রুত পানি নিষ্কাশন চায়।
এদিকে, ২নং ভুনবীর ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, আব্দুল হাসিম, আব্দুল মন্নাফ, আব্দুল মোমেন, নজরুল ইসলাম, মতি মিয়া, ইদ্রিছ আলী ও সোহাগ মিয়া গ্রামবাসীর পক্ষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য নির্মিত বাঁধ অপসারণে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক কৃষি জমি ও বসতবাড়ির জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন।
এর অনুলিপি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সভাপতি/সম্পাদক শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে প্রদান করেন। এতে অবৈধ বালু উত্তোলনের জন্য নির্মিত বাঁধ অপসারণে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কৃষি জমি ও বসতবাড়ি জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার আবেদন জানানো হয়।