সিলেট প্রেসক্লাবের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ॥ সাংবাদিকরা যদি বস্তুনিষ্ঠ তথ্য তুলে ধরেন তাহলে তারা নমস্য হন

90
সিলেট প্রেসক্লাব-মাহা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি।

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট সদর হাসপাতাল পুনঃনির্মাণের জন্য নতুন জায়গা খুঁজতে গেলে হাসপাতাল না হওয়ার শংকায় পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি। তিনি বলেছেন, যথা সময়ে কাজ শুরু করতে না পারলে আগামী জুন মাসে বাজেটের টাকা ফেরত চলে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে সিলেট সদর হাসপাতাল পুন:নির্মাণের জন্য আলোচনা শুরু হয়। ২০১৩ সালে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌছা সম্ভব হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী আগামী ১৫ এপ্রিল এ হাসপাতালের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা। ঠিক এই সময়ে নির্ধারিত জায়গা নিয়ে নতুন বিতর্ক ওঠায় প্রকল্পটি গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আবু সিনা ছাত্রাবাসকে ঐতিহ্যবাহী ভবন আখ্যা দিয়ে এটি সংরক্ষণের দাবি যারা তুলছেন তারা এতদিন কোথায় ছিলেন? গত সাত বছর ধরে এ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখন অন্তিম সময়ে এসে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিরোধিতার কারণে হাসপাতালটি হয়তো আমাদের হারাতে হবে। কারণ আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের টাকা ব্যয় করতে না পারলে তা মন্ত্রণালয়ে ফেরত যাবে। এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও সুধী সমাজের হস্তক্ষেপ কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শনিবার (৩০ মার্চ) সিলেট প্রেসক্লাব-মাহা অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কথাগুলো বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন নির্ধারিত স্থানে হাসপাতাল নির্মাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আরো বলেন, দুনিয়ার সব জায়গায় একটি হাসপাতালের পাশে একাধিক হাসপাতাল থাকে। এতে যে কোন জটিল মুহূর্তে চিকিৎসক ও নার্সিং স্টাফরা সমন্বয় করে কাজ করতে পারেন।
সিলেট প্রেসক্লাবের আমীনূর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সময় টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরো চীফ ইকরামুল কবির। অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রসঙ্গে পররারাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, সাংবাদিকরা হচ্ছেন সমাজের চক্ষু, জাতির বিবেক। সাংবাদিকরা যদি বস্তুনিষ্ঠ তথ্য তুলে ধরেন তা হলে তারা নমস্য হন। সরকারের উন্নয়নের বড় হাতিয়ার হিসেবে সাংবাদিকরা অবদান রাখতে পারেন। মন্ত্রী বলেন, আপানারা বস্তুনিষ্ঠ তথ্য তুলে ধরবেন, সরকারের উন্নয়নের সহযোগী হবেন। আমাদের দুর্বলতা থাকলে, তাও তুলে ধরেন। সিলেট প্রেসক্লাব মানসম্মত সাংবাদিকতার বিকাশে কাজ করছে জেনে সন্তোস প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী। তিনি বলেন, সিলেটের সাংবাদিকতা শত বছরের ঐতিহ্যের ধারায় ¯œাত। এ ধারাকে এগিয়ে নিতে সিলেট প্রেসক্লাব কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়ন প্রজেক্টগুলো প্রায়ই দীর্ঘায়িত হয়, এতে সরকারের খরচ বাড়ে। এর জন্য দেশের প্রজেক্টগুলো যাতে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়, সে দিকে সাংবাদিকদের নজরদারি রাখার আহবান জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, সিলেটের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন হবে। ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন কিছু দুষ্টলোক তাদের বিরক্ত করে, সে দিকেও যাতে সাংবাদিকরা নজর রাখেন, সে আহবানও জানান তিনি।
সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও একাত্তর টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরো প্রধান ইকবাল মাহমুদ এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান মাহা’র স্বত্তাধিকারী, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সিলেটের ডাক এর বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্রে বিশ্বাস সমর, সাবেক সহ-সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক আব্দুল কাদের তাপাদার, সাবেক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক ও সময় টেলিভিশেনের রিপোর্টার আব্দুল আহাদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিলেট প্রেসক্লাবের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক ও দৈনিক সিলেটের ডাক এর সিনিয়র রিপোর্টার নূর আহমদ। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সাবেক কোষাধ্যক্ষ কবীর আহমদ সোহেল ও পবিত্র গীতা পাঠ করেন শ্যামানন্দ দাশ। অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন সিনিয়র সহসভাপতি এনামুল হক জুবের, সহ সভাপতি এম এ হান্নান ও কোষাধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিন শিহাব। এ সময় ক্লাবের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক ইয়াহইয়া ফজল, পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শুয়াইবুল ইসলাম ও দিগেন সিংহ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন। প্রতিযোগিতা উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এবারের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১১টি ইভেন্টের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫টি ইভেন্টে আনিস রহমান ও ৪টি করে যথাক্রমে বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী, মো. মঈন উদ্দিন মনজু ও শেখ আশরাফুল আলম নাসির, ৩টিতে মারুফ আহমদ এবং ২টিতে ইকরামুল কবির ও নাজমুল কবীর পাভেল বিজয়ী হয়েছেন। ১টি করে ইভেন্টে মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, ইকবাল মাহমুদ, খালেদ আহমদ, শাহাব উদ্দিন শিহাব, মো. দুলাল হোসেন, শাহ মো. কয়েছ আহমদ, মো. কামরুল ইসলাম, শ্যামানন্দ দাশ, আবু তালেব মুরাদ, হাসান মো. শামীম, মানাউবি সিংহ শুভ, ইদ্রিছ আলী ও দিপক বৈদ্য দিপু বিজয়ী হয়েছেন।