কানাইঘাটে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে টেম্পু চালককে হত্যা

42

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাটে পাওনা টাকা চাহিতে গিয়ে শফিকুর রহমান (৫৩) নামের এক টেম্পু চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনা নিয়ে থানায় নিহতের ২ স্ত্রীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের নিয়ে রশি টানাটানি চলছে।
জানা যায় গোলাপগঞ্জ উপজেলার মেহেরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নানের পুত্র টেম্পু চালক শফিকুর রহমান কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগর পশ্চিম (করচটি) গ্রামের আলতাফ উদ্দিনের পুত্র ফারুক আহমদ (২৮) এর কাছে জমি বন্ধকী বাবৎ ১ লক্ষ টাকা তার পাওনা ছিল। গত রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শফিকুর রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রী ময়না বেগম (২৮) কে সাথে নিয়ে কানাইঘাটে ফারুক আহমদের বাড়ীতে তার পাওনা ১ লক্ষ টাকা নিতে আসেন। এক পর্যায়ে ফারুক আহমদ সহ তার স্বজনরা পাওনাদার শফিকুর রহমান কে হাত পা বেঁধে ও তার স্ত্রী ময়না বেগম কে বসত ঘরের একটি কক্ষে আটক করে রেখে শফিকুর রহমানকে পিটিয়ে ও মাথায় রক্তাক্ত আঘাত করে হত্যা করে। স্বামী কে প্রাণে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা ময়না বেগমকে মারধর করে আহত করে। পরে হত্যাকারীরা স্থানীয় সড়কের বাজারের আজির মিয়ার ফার্মেসীর সামনে শফিকুর রহমানের নিতর দেহ একটি এ্যাম্বুলেন্সে তোলে তার স্ত্রী ময়না বেগমকে এ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে জোরপূর্বক ভাবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে রক্তাক্ত শফিকুর রহমানের নিথর দেহ নিয়ে যাবার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত শফিকুর রহমানের স্ত্রী ৪ সন্তানের জননী ময়না বেগম বাদী হয়ে পরদিন সোমবার রাতে কানাইঘাট থানায় তার স্বামীকে হত্যার দায়ে ফারুক আহমদকে প্রধান আসামী ও তার স্বজন দর্পনগর পশ্চিম (করচটি) গ্রামের তেরা মিয়ার পুত্র মস্তাক আহমদ (২২) ও তার ভাই জসিম আহমদ (৩০), আলতাফ হোসেনের পুত্র বিপুল (২৫) ও তার ভাই ফরহাদ আহমদ (২০), মানিক মিয়ার পুত্র শাহজাহান (২২), কবির আহমদের পুত্র তামিম আহমদ (২১), আলতাফ উদ্দিনের মেয়ে ফেরদৌসী বেগম (৩৫), নাজিম উদ্দিনের পুত্র মকছুদ (৫০) কে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী নিহত শফিকুর রহমানের স্ত্রী মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে ময়না বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন পুলিশ তার অভিযোগটি রেকর্ড না করে তার সতিন স্বামীর প্রথম স্ত্রী মল্লিকা রহমান গত শুক্রবার কানাইঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সেটি রেকর্ড করা হয়। থানার মামলা নং ২০ তাং-২১/০৩/২০১৯ইং। মল্লিকা রহমানের দায়েরকৃত মামলায় ফারুক আহমদের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত নামা ২/৩ জন কে আসামী করা হয়েছে। ময়না বেগমের অভিযোগ তার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে এবং হত্যাকান্ডে সহযোগিতা করেছে তাদের কে তিনি মামলায় আসামী করেছিলেন। কিন্তু তার অভিযোগটি রেকর্ড না করে পুলিশ তার সতিনের অভিযোগটি রেকর্ড করায় তার স্বামী হত্যার অনেক আসামী মামলা থেকে বাদ পড়েছে। এ ব্যাপারে তিনি স্বামী হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করবেন। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানিয়েছেন শফিকুর রহমান কে কি ভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত শুরু হয়েছে। তার স্ত্রী মল্লিকা রহমানের মামলার সূত্রধরে আসামী ফারুক আহমদ কে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাকে আটক করলে হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।