মণিপুরী ভাষা উৎসব ২০১৯ অনুষ্ঠিত

27
মণিপুরী ভাষাকে বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে বাঁচিয়ে রাখার ও বিকশিত করার জন্য একাদশ মণিপুরী ভাষা উৎসব উপলক্ষে নগরীতে শোভাযাত্রা বের করা হয়।

মণিপুরী ভাষাকে বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে বাঁটিয়ে রাখার ও বিকশিত জন্য বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো একাদশতম ‘মণিপুরী ভাষা উৎসব ২০১৯’। গতকাল শুক্রবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দিনব্যাপির এ উৎসব শুরু হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মাধমে। উৎসব উদ্বোধন করেন নীলিমা-এস সি সিনহা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এডভোকেট এস সি সিনহা।
উৎসবের সমাপনী অধিবেশন ও পুরস্কার বিতরণী পর্বে বক্তারা মণিপুরী ভাষা উৎসব আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, মাতৃভাষা মানুষের জন্মগত অধিকার। প্রতিটি জাতি বা জনগোষ্ঠীর শিশুদেরকে নিজের মাতৃভাষায় অন্তত প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষালাভের সুযোগ করে দিতে হবে। এছাড়া এদেশে প্রচলিত প্রতিটি ভাষার প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং ঐসব ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখা ও উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্র- সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, মণিপুরী ভাষা ভারতের সংবিধান স্বীকৃত অন্যতম জাতীয় ভাষা এবং ভারতের মণিপুর রাজ্যের রাজ্য ভাষা। ভারতে এ ভাষায় প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে বিশ^বিদ্যালয়ের সর্বচ্চো ডিগ্রী পর্যন্ত লাভ করা যায়। অন্যদিকে বাংলাদেশে চর্চা ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে উত্তোরণের জন্য পারিবারিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে আসার পাশাপাশি সকল মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মণিপুরী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি এ কে শেরামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা পর্বে সম্মানীয় অতিথি ছিলেন জুড়ি উপলোর ভাইস চেয়ারম্যান রঞ্জিতা শর্মা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদ, বিশগাঁও শাখার সভাপতি খোইরোম কামিনী কুমার সিংহ, ছোটধামাই শাখার সভাপতি অহৈবম রনজিৎ, বিশিষ্ট ব্যাংকার প্রশান্ত কুমার সিংহ। দুপুরে দুই গ্র“পে বিভক্ত হয়ে স্কুল পর্যায়ের মণিপুরী শিক্ষার্থীরা ভাষা বিষয়ক লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। রাজা জি সি হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় সিলেট ছাড়াও হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এবং মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও জুড়ী উপজেলায় ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। মধ্যাহ্নবিরতির শুরু হয় শিক্ষার্থীদের কুইজ ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ পর্বে বিশেষজ্ঞ প্যানেলে বিচারক ছিলেন মাইবম বীরেন্দ্র, কবি শেরাম নিরঞ্জন, কবি মুতুম অপু। সাংস্কৃতিক পর্বে শিক্ষার্থীরা নৃত্য, গীত পরিবেশন করে আয়োজনকে আনন্দে ভরিয়ে তুলেন। এতে অংশ নেয় ময়াংলম্বম মেরিনা, লৈরাং চনু নিশি, রিশিতা রাজকুমারী, বিনতা শর্মা, পুষ্পিতা দেবী, নিশিরাণী দেবী। উৎসবে বিজয়ী প্রতিযোগীদের মধ্যে ক্রেস্ট, নগদ অর্থ, বই ও অন্যান্য শিক্ষা সরঞ্জাম দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংসদের সাধারণ সম্পাদক নামব্রম শংকর। বিজ্ঞপ্তি