নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

64

ছনি চৌধুরী হবিগঞ্জ থেকে :
আসন্ন ১০ ফেব্র“য়ারী অনুষ্ঠিত হবে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বিএনপি বিহীন এ নির্বাচন অতি নিকটে রেখে আওয়ামীলীগ-জাতীয় পার্টিসহ প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে খ্যাত নবীগঞ্জের বিশাল জনগোষ্ঠী যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেন। এরই মাঝে প্রবাস থেকে স্বদেশে ফিরে এসে অনেক প্রবাসী বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছেন। ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নবীগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলায় পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১১৫৮৩০ ও মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১২০৩৭৩ মোট ভোটার ২৩৬২০৩ জন। নবীগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রচারণায় নেমে পড়েছে প্রার্থীরা। দলীয় প্রার্থীর চেয়ে ব্যক্তি ইমেজেই এগিয়ে আছেন অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ ও বিদ্রোহীদের মধ্যে নৌকা ঘোড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিচ্ছেন অনেক ভোটররা।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী। তিনি এবারো আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এ নির্বাচনে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফ আলী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম (হাঁস) প্রতীকে স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম (ঘোড়া) প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে পুরোধমে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত গোলাম সারোয়ার হাদী গাজির স্ত্রী গাজী খালেদা সারোয়ার (দোয়াত কলম), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই (কাপ-পিরিচ), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন হায়দর মিয়া (লাঙল) ও ইসলামী ঐক্যজোট মাওলানা আবু ছালেহ (মিনার)।
চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রতিনিয়িত সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোশল বিনিময় এবং উঠান বৈঠক ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিল ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল (টিউবওয়েল), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ (তালা), উপজেলা জাপার আহ্বায়ক ডাঃ শাহ আবুল খায়ের (উড়ো জাহাজ), জাতীয় পাটির মনোনীত প্রার্থী মুরাদ আহমদ (লাঙ্গল), আওয়ামীলীগ নেতা আবু ইউসুফ (চশমা), ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাক আহমদ ফারকানী (মিনার)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম (হাঁস) ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছইফা রহমান কাকুলি (ফুটবল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজেদা মজিদ (কলস)।
চেয়ারম্যান পদে শহর থেকে গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত ভোটারদের মধ্যে আলোচনার রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম। অন্যদিকে দিনারপুর পরগনায় আঞ্চলিকতার ঐক্য যদি শেষ পর্যন্ত গড়ে উঠে তাহলে চমক দেখিয়ে মুল প্রতিন্ধীতায় আসতে পারেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত গোলাম সারোয়ার হাদী গাজির স্ত্রী গাজী খালেদা সারোয়ার। এ ছাড়া অপর প্রার্থীদের সমর্থকরাও নিজেদের প্রার্থীদের প্রাচরণায় ব্যস্থ সময় পার করছেন। অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ার‌্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছইফা রহমান কাকুলির মধ্যেই মুল প্রতিদ্ধীতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ধীতা হতে পারে ত্রিমুখী। এদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, উপজেলা জাপার আহ্বায়ক ডাঃ শাহ আবুল খায়েরের মধ্যে।