‘আপনাকে আমরা ছাড়ছি না’

35

কাজিরবাজার ডেস্ক :
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সংসদ ছেড়ে যেতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ‘তিনি বলেছেন, এবারের বাজেট তার শেষ বাজেট। তিনি আর নির্বাচন করবেন না। কেন বলেছেন? আমরা আপনার মতো এ রকম জ্ঞানিগুণী ব্যক্তি পাবো কোথায়? আমরা তো আপনাকে ছাড়ছি না।’ বুধবার (২৭ জুন) প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ‘কোটার বিষয়টি এখন স্থগিত আছে। এই সমস্যার কী সমাধান করলেন, মানুষ তা জানতে চায়।’
রওশন এরশাদ বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে ব্যক্তি ও সরকারি খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুরু করেছিল। ওই সময় প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। চার বার প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়িয়ে এখন ৪৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।’
৩০ লাখ লোকের কর নিবন্ধন থাকলেও মাত্র ১৫/১৬ লাখ আয়কর দেন উল্লেখ করে রওশদ এরশাদ বলেন, ‘দেশের এককোটি মানুষের আয়কর দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। করনেট বাড়ানো গেলে বাজেট বাস্তবায়ন সহজ হবে।’
শিক্ষাখাতে নানা ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ‘শিক্ষার মান অনেক নেমে গেছে। কয়েকবার বই পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রশ্নফাঁস হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারে না। এসর ত্রুটি দূর করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘দেশের ১০ কোটি ৪১ লাখ কর্মক্ষম। এর মধ্যে ৫ কোটি মানুষের কোনও কর্মসংস্থান নেই। প্রতি বছরই ২০/২৫ লাখ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে। মানুষ চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ না করা গেলে তারা বিপথে যাবে। বেকারত্বের কারণে ঘরে ঘরে মাদক পৌঁছে গেছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে সন্ত্রাস ও মাদক বন্ধ হবে।’ বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব করেন তিনি।
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ‘দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জনগণ আস্থা পায় না। বিদেশে গেলে রোগীদের কথা চিকিৎসরা মন দিয়ে শোনেন। কিন্তু আমাদের এখানে চিকিৎসকরা একসঙ্গে ৪/৫ জন রোগী দেখেন। যে কারণে যাদের একটু সঙ্গতি রয়েছে, তারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে চলে যান। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা আনা গেলে অনেক অর্থ বাঁচানো যেতো।’
বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমরা সংসদ বর্জন করিনি। কোনও আজেবাজে কাজ করতে বা কথা বলতে দেইনি। সংসদ প্রাণবন্ত ছিল।’