ছাতকে কয়েকটি হাওর ফসল হারার ঝুঁকিতে

31

আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
চলছি বছর সরকারের সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়ার পরেও প্রয়াজনীয় ক্লোজার পাউবো’র চেইনেজভুক্ত না হওয়ায় ছাতকের বৃহত্তর নাইন্দার হাওর, ডেকার হাওর, চাউলীর হাওরসহ বেশ কয়েকটি হাওর রয়েছে ফসলহানীর ঝুঁকিতে।
স্থানীয় কৃষকদের আশঙ্কা, চেইনেজভুক্ত না হওয়া ক্লোজারের কাজ না হলে হাওরে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধ বিফলে যেতে পারে।
জানা যায়, নোয়ারাই ইউনিয়নের বিশনাই খালের পাশে ১ নম্বর পিআইসিতে কাজ শুরু করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যে নকশা দেওয়া হয়েছে তাতে প্রায় আধা কি.মি. গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মৌসুমে বিশনাই খালে প্রবাহিত পাহাড়ি ঢলে ডুবে যেতে পারে পুরো হাওর, ফলে ২৪লক্ষ ৮৫ হাজার টাকায় ব্যায়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি পুরোটাই শুধুই শান্তনা ছাড়া কিছুই নয়। ফসল রক্ষার জন্য বাঁধ না ফসল হানীর জন্য ফাঁদ এ বিষয় নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষক।
এছাড়া একই হাওরের ২নং পিআইসিতে পাউবো’র প্রায় ১০ লক্ষ টাকার প্রাক্কালিত ৩টি স্কিম হয়েছে চেইনেজভুক্ত। এখানে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্কীম চেইনেজভুক্ত না হওয়ার ফলে হাওরে অনায়াসে পানি ডুকে তলিয়ে যেতে পারে ফসল। তাই এখানেও ১০ লক্ষ টাকার ঐ দুটি স্কীম বিফলে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে নাইন্দার হাওরের সাহেবের খাল, চৌধুরীর খালের ক্লোজার চেইনেজভুক্ত থাকার পরও এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় এদিক দিয়ে সুরমা নদীর পানি প্রবেশ করে এবারও ফসলহানি হতে পারে উপজেলার বৃহত্তম এই হাওরে।
এদিকে কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই সাপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো বাঁধের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়নি।
জানা গেছে, পিআইসি-১ (নাইন্দার হাওর,কচুদাইর) ৭০-৭৫ভাগ, পিআইসি-২ (নাইন্দার হাওর, রংপুর) ৬০-৬৫ভাগ, পিআইসি-৫ (নাইন্দার, লক্ষীবাউর) ৪৫-৫০ভাগ, পিআইসি-৬ (ডেকার হাওর, জাউয়া বাজার) ৭০-৭৫ভাগ, পিআইসি-৭ (ডেকার হাওর, চরমহল্লা) ৫০-৫৫ভাগ, পিআইসি-৮,৯,১০,১১ (চাউলির হাওর, সিংচাপইড়) ২০-২৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। অধিকাংশ বাঁধে নুতন কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) নীতিমালা অনুযায়ি ¯ে¬াপ তৈরি, দুরমুজসহ ড্রেসিং এর কাজ কিছুই শেষ হয়নি।
পিআইসি সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, হাওর থেকে দেরি করে পানি নামা, দেরিতে নকশা ও প্রাক্কলন তৈরি, মাটি সংকট, শ্রমিক সঙ্কটের কারণে বাঁধ নির্মাণের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পিআইসি মনিটরিং কমিটির সভাপতি নাসির উল্লাহ খান বলেন, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যে নকশা ও প্রাক্কলন দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ি কাজ হচ্ছে। যে ক্লোজারগুলো বাকী রয়েছে ওইগুলা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
কাজের ধীরগতি সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, গেল বছর ডিসেম্বর মাসে হাওর ও নদীর পানি সমান্তরাল ছিল। তাই বেশির ভাগ হাওরের পানি নামতে অন্যান্য সময়ের চেয়ে ২০/২৫ দিন বেশি লেগেছে। এজন্য বাঁধের আনুমানিক ব্যয়, নকশা ও প্রকল্প প্রস্তবনা তৈরিসহ সবকিছুতেই সময় লেগেছে।