দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ॥ ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৯টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই

24

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। তাই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা অধিকাংশ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকগণ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকায় নষ্ট হচ্ছে চেইন অব কমান্ড। একই পদবীর শিক্ষকরা কমান্ড মানতে চান না। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তন্মধ্যে ৯৭ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩৮ জন এবং ৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতে প্রধান শিক্ষক নেই। মোট ৪ শত ১৬ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ১৩৮টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। যেখানে ২৬ হাজারের মতো শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করছে প্রধান শিক্ষক বঞ্চিত ‘ভারপ্রাপ্ত’র অধীনে। এতো বিপূল সংখ্যক শিক্ষার্থী অভিভাবকহীণ অবস্থায় পাঠদান নিচ্ছে। এদের অভিভাবক ও উপজেলার সচেতন মহল বিষয়টিকে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছেন। তাঁরা শিক্ষার এই প্রারম্ভিক স্তরের এ দুরবস্থাকে ভাবছেন গোড়ায় গলদ হিসেবে। তারা সর্বাবস্থায় ব্যস্ত থাকেন দাপ্তরিক কর্মকান্ড নিয়ে। এতে নিজের জন্যে বরাদ্দকৃত শ্রেণীতেও পাঠদান করতে পারছেন না শুধু মাত্র সময়ের অভাবে। শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষকের অভাবে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনাতেও পিছিয়ে পড়ছে কোমলমতি শিশুরা। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আগামী পরীক্ষাগুলোতে। প্রধান শিক্ষক ছাড়া প্রতিষ্ঠান চালানো কষ্টের ব্যাপার। এ উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে যাতায়াতে নৌকার মতো যানবাহনের সাহায্য নিতে হয়। ‘‘বর্ষায় নাও হেমন্তে পাও’’ একটি প্রবাদ রয়েছে যার পুরোটাই এ উপজেলার জন্য প্রযোজ্য। যার ফলে নৌকায় চলাচল প্রবন এলাকায় শিক্ষকরা চাকুরীতে যোগদান করেই বদলীর অপেক্ষায় থাকেন, কবে বদলী হবেন। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই যথারীতি ১/২ মাসের মধ্যেই বদলী হয়ে যান। এ উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুনামগঞ্জ শহরে থাকেন। শহরাঞ্চলের শিক্ষকরা নিয়োগ পেয়ে গ্রামে শিক্ষকতা করতে চাননা। যে কারনে গ্রামের শিক্ষার্থীরা সু-শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি জরুরী ভিত্তিতে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের শূন্যপদ পুরণ করা হউক।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বজলুর রহমান জানান, শিশুদের শিক্ষার প্রথম স্তম্ভ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ নাই।  শিক্ষক সংকট থাকা সত্বেও বিদ্যালয়ে পাঠ দান চলছে। তবে বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। শীঘ্র্রই শিক্ষক সংকট সমাধান হবে।