কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী মাসের শেষ দিকে পৌর নির্বাচন শুরু হচ্ছে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় এ নির্বাচন করার আয়োজনও প্রায় সম্পন্ন। এরই মধ্যে ভোটের হাওয়াও বইতে শুরু করেছে।আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নানা কায়দায় ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বসে নেই তৃণমূল বিএনপিও।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তের মধ্যে সরকারের ষড়যন্ত্র দেখলেও এই নির্বাচনকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিতে আগ্রহী নয় তারা। কেন্দ্রের অনেক নেতাই পৌর নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না নানা সমস্যায় জর্জড়িত বিএনপি।
তবে ভেতরে ভেতরে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। কেন্দ্র থেকে কোনো দিক নির্দেশনা না পেয়ে সরাসরি এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন এমন খবরও আছে।
দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া দেশে ফিরে শীর্ষ নেতাদের বৈঠক ডাকবেন। জোটের সঙ্গেও বসবেন। সেখান থেকেই স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়াসহ সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। পরবর্তী সময়ে তা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জানিয়ে দেয়া হবে।
এছাড়াও দলীয়ভাবে না জোটগতভাবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে সে সিদ্ধান্তও আসবে দলীয় প্রধান দেশে ফেরার পর। তাই নজর এখন লন্ডনের দিকে। কখন ফিরবেন দলীয় প্রধান। কারণ খালেদা জিয়া দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না দলটি।
তবে ইতিমধ্যে জোটের শরিক এলডিপিসহ কয়েকটি ছোট দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অংশ নেয়ার ব্যাপারে দলীয় ফোরামে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
সম্প্রতি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান এমন অনেকের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। কার্যালয়ে যারা আছেন তাদের কাছ থেকে নির্দেশনা চাচ্ছেন। তবে কাউকে চূড়ান্ত করে কোনো নির্দেশনা দিতে পারছেন না বিএনপি নেতারা।
গত সপ্তাহে মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আন্দোলনের কারণে দলের তৃণমূল তছনছ। এরমধ্যে বিনা চ্যালেঞ্জে মাঠ ছেড়ে দিলে তারা যতটুকু টিকে আছেন তা-ও থাকবে না।”
শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলে তিনি মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথাও জানান।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না জানতে চাইলে দলের চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বরাবরই নির্বাচনমুখী দল। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়া যায়। আশা করি শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।”
এদিকে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী দলীয়ভাবে অংশ নিতে না পারার বিষয়টি বিএনপি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে জানা গেছে। কারণ বিগত উপজেলাসহ স্থানীয় অন্যান্য নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাদের বেগ পেতে হয়েছে। একই জায়গায় বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী থাকায় ভরাডুবি হয়। কিন্তু এবার সেই আশংকা থাকবে না।
এদিকে ২০ দলের শরিক একটি দলের চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “জামায়াতসহ শরিক অন্য দল ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা তৈরির কাজ করছে। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।”