গতকাল ১৮ এপ্রিল শনিবার সকাল ১১টায় নগরীর মানিকপীর রোডস্থ জালালাবাদ রোটারী হাসপাতালের কনফারেন্স হলে সিলেট পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘মানবাধিকার, গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সাবেক সচিব ও যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডের সাবেক রাষ্ট্রদূত বিশিষ্ট লেখক মোফাজ্জল করিম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মানবাধিকার, গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র নিয়ে ব্যাপক চর্চা করা প্রয়োজন। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য। যে প্রেক্ষপটে আজ আমরা মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করছি সেখানে পদে পদে চরম ভাবে মানবাধিকার লংঘিত। আবার কখনো কখনো যেখানে মানবাধিকার নেই সেখানে দানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রের জন্য ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর থেকে যে আন্দোলন সংগ্রাম সূচনা হয়েছিল তার ধারবাহিকতায় ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতাকামী মানুষের শাহাদত বরণ ও অজস্র মা-বোনের সম্ভ্রমহানীর এবং ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়ে ছিল। স্বাধীনতার পূর্বে দেশে সহিংসতা পরিস্থিতি তুলে ধরে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করা হয়ে ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল মানবাধিকার ও গণতন্ত্র। আজ মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখিন। যদিও স্বাধীনতার পর বাঙালি জাতি আশায় বুক বেঁধে ছিল যে, পাকিস্তান আমলে যে ২৪ বছর আমরা সম অধিকার, গণতন্ত্র পাই নাই তা পূরণ হবে। কিন্তু যে মূলমন্ত্র নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে ছিলাম তার মধ্যে অন্যতম গণতন্ত্র, সেই গণতন্ত্র এখন স্বৈতন্ত্র পরিণত হতে চলেছে। দু:খের বিষয় যে গণতন্ত্র আমরা পাকিস্তানীদের কাছ থেকে পাই নাই সেটা এখনো সুদূর পরা হত। আর সমাজতন্ত্র সমান ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার অচিরে সেটাও আজ ধূলিস্যাৎ। আজ যে তিনিটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও আজ আমাদেরকে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব শত চেষ্টা করে কেড়ে নেওয়া যায় না সেটা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে। বর্তমানে চরম ভাবে গণগ্রেফতার ও গুম সহ সকল স্তরে চরম ভাবে পদে পদে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। গণতন্ত্রে মূল স্তর হচ্ছে ভোটাধিকার কিন্তু সেই ভোটে কালো টাকা ছড়িয়ে, ভয় ভীতি হুমকি দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করা হয়। স্বাধীনতা ৪৪ বছরে আজ পর্যন্ত দুই একটি নির্বাচন ছাড়া সব গুলো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। আসুন আমরা রাজনৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গীর পরিবর্তন করে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। রাজনীতিবিদদের এ ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যেমে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা ঐক্যবন্ধ ভাবে কাজ করা এখন সময়ের দাবী।
সিলেট পেশাজীবী পরিষদ‘র আহবায়ক লেঃ কর্ণেল (অব.) প্রিন্সিপাল আতাউর রহমান পীর‘র সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক নুরুল ইসলাম‘র পরিচালনায় আলোচনা অংশ গ্রহণ করবেন স্কলার্স হোম স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সিদ্দিকী (অব.), ‘সুজন’ সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাব‘র সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মুসলীম সাহিত্য সংসদ‘র সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিক, সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রি লিমিটেডের পরিচালক ও সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট বিভাগের সমম্বকারী ডা. আর কে ধর, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসার ড. মোজাম্মেল হক, রোটারী ক্লাব অব জালালাবাদ‘র প্রেসিডেন্ট নমিনি এডভোকেট মোজাক্কির হোসেন কামালী, সময় টিভি‘র সিলেট ব্যুরো চীফ ইকরামুল কবির, অনলাইন প্রেসক্লাব সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি মুহিত চৌধুরী, সিলেট বিভাগ জনকল্যাণ ট্রাষ্ট‘র চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক চৌধুরী, সাপ্তাহিক নকশী বাংলা পত্রিকার সম্পাদক সালেহ আহমদ হোসাইন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী আ ফ ম জাকারিয়া, এনটিভি সিলেট প্রতিনিধি মারুফ আহমদ, সচেতন নাগরিক ফোরাম সিলেটের যুগ্ম আহবায়ক ফয়জল বারী, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, আই এস পি‘র সাধারণ সম্পাদক এম রহমান, ক্যামেরা জানালিষ্ট এসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি আনিস রহমান, সময় টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক নৌশাদ আহমদ চৌধুরী, ওসমানী আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের চেয়ারম্যান আব্দুর রকিব, সাবেক ই ডি এন অফিসার্স মুহিবুছ সামাদ, সাংবাদিক ফয়ছল আহমদ সাগর, মিঠু দাস জয়, সিলেট উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন, মুহিনুর ইসলাম পাপ্পু প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি