প্রাণের উচ্ছ্বাসে সিলেটে বর্ষবরণ

116

DSC_5677স্টাফ রিপোর্টার :
অশুভ বিতাড়ন করে নতুনের আবাহনে সিলেটে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে বর্ষবরণ পালিত হয়েছে। মানুষের ঢলে পদচারণায় মুখরিত ছিল সুরমার তীর। গতকাল মঙ্গলবার ১৪২২ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখের দিনটিকে বরণ করে নিতে সকাল থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, স্কুল- কলেজের ছাত্রছাত্রীরাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ। নগরজুড়ে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। সব শ্রেণী পেশার মানুষ বাংলা নববর্ষের এ দিনে সকল বেদাবেদ ভুলে একাকার হয়ে গেছে।
নগরীর ঘুরে দেখা যায়, চাঁদনীঘাট, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানাসহ নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে র‌্যালী, গাড়িতে মাইক বাজিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হচ্ছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা গান-বাজনা করে তৃপ্তি পাচ্ছে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। তবে এ সব আনন্দ উৎসবে স্কুল- কলেজের ছাত্রছাত্রীরাই বেশি।
সবার পড়নে নতুন বছর উপলক্ষে ঝলমলে নতুন জামা। শিক্ষার্থীরাও সেজেছিল নানা সাজে। কেউ কৃষক, কেউ জমিদার, কেউবা রাখাল, কেউবা নিজেকে কাটুন সেজে অপরকে আনন্দ দিচ্ছেন। হাতি, ঘোড়া, ফেস্টুন, ব্যানার, কারো কাঁধে লাঙ্গল, সবমিলিয়ে নানারঙের সমারোহে বর্ণিল এক আয়োজন। শোভাযাত্রা গুলো প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে বৈশাখী মেলাই যেন গন্তব্য।
নগরীর কীন ব্রিজ এলাকায় বৈশাখী মেলায় মানুষের ঢল নেমেছিল, ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজের প্রাথমিক ক্যাম্পাসে বাউল মেলা, শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে নববর্ষ উদযাপন পর্ষদ ১৪২২’র বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, এমসি কলেজ, মদন মোহন কলেজসহ বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখ বরণের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিলেটে পালিত বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি :
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র : চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট এর উদ্যোগে নানা আয়োজনে ১লা বৈশাখ ১৪২২ কে বরণ করা হয়। গত ১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় চৌহাট্টাস্থ ভোলানন্দ নৈশ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে ছিল চিত্রাংকন, কুইজ, রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট এর সংগঠক ভোলানাথ দাশ এর সভাপতিত্বে ও নাজিকুল ইসলাম রানার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, বাসদ সমন্বয়ক আবু জাফর, ড. নেছার আহমদ কায়ছার, শাবিপ্রবি প্রভাষক শাকিল ভূইয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের প্রবীণ রাজনেতিক ব্যক্তিত্ব এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য, ন্যাপ মহানগর সভাপতি ইসহাক আলী, গণতন্ত্রী পার্টি জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সর্দার, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নিরঞ্জন দে যাদু, তুহিন কান্তি ধর, যুব ইউনিয়ন সভাপতি খায়রুল হাসান, গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট জেলা সমাজ সেবা সম্পাদক আজিজুর রহমান খোকন প্রমুখ। চিত্রাংক প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। চিত্রাংকন, কুইচ, রচনা প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করেন বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের সংগঠক বদরুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাঙালি সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক উৎসব ১লা বৈশাখ। বিগত বছরের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকট দূর করে আগামীর গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণে সবাইকে ঐকবদ্ধ হতে হবে।
শ্র“তি-গ্রামীণফোন বর্ষবরণ : আমাদের ষড়ঋতুর দেশ। আমাদের জীবনচর্চায়ও ষড়ৈশ্বর্যের পরাক্রম যশ সম্পদ জ্ঞান বৈরাগ্যের মিলন-উৎসব প্রসাধন। বৈশাখের প্রথম দিনের সূর্য সোনার থালায় চড়ে এসে আমাদের প্রত্যেকের ঘুম ভাঙায়। আমরাও সমস্বরে বলে উঠি:
এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।12
বাংলার সমাজসভ্যতার পরতে পরতে মিশে আছে এই মানস আলোর শিখা হয়ে। যায় আভায় দিনগত পাপক্ষয়ে ব্যস্ত মানুষের কানে এসে লাগে বৈশাখের আহবানধ্বনি-নতুন জীবনের উদ্ভাস হয়ে। বর্ষবরণের ডানায় আশার বাণী ধ্বনিত হতে থাকে। আমরা খুঁজে পাই আপন সত্তাকে রূপ থেকে রূপান্তরে। চৈত্রের ঝরাপাতা মাড়িয়ে বৈশাখের খরবায়ু সঙ্গে করে সামনের বারো মাসের পথপরিক্রমা। চলতে থাকারই আর-এক নাম জীবন। এই জীবনকে ঘিরেই মানুষের সব আয়োজন।
বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতিকে নতুন করে আত্মপরিচয়ে আগ্রহী করে তোলে। বাঙালির বড় শক্তি হচ্ছে তার ভাষা, তার সংস্কৃতি। পহেলা বৈশাখ আমাদের কে নতুন ভাবে পথ চলার সহস যোগায়। যা জীর্ণ, পুরাতন, ব্যর্থ সবকিছু ফেলে আগামীর পথের প্রেরণা পহেলা বৈশাখ। গতকাল পহেলা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল ২০১৫ মঙ্গলবার, ব্লু-বার্ড এন্ড স্কুল কলেজ প্রাঙ্গণে ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্র“তি-সিলেট এর আয়োজনে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন এর সহযোগিতায় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য শতকন্ঠে বর্ষবরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গল ঢাকের আবাহনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া হয়। সপ্তসুরের আবাহনে বিদায় জানানো হয় বিগত বছরকে। এরপর পরই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আগামী দিনের শিশু-কিশোরের শত শত কন্ঠে নতুন বছরের আবাহন বার্তা। দিনব্যাপী বর্ষবরণ উৎসব মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বোলনের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন কবি তুষার কর। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার জামাল উদ্দিন আহমেদ, ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুসনে আরা, গ্রামীণ ফোন সিলেটের এরিয়া ম্যানেজার নাসিরুজ্জামন চৌধুরী প্রমুখ। দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ উৎসবের প্রভাতি পর্বের প্রথমেই স্বাগত বক্তব্য নিয়ে আসেন শ্র“তি-সিলেট এর সদস্য সচিব সুকান্ত গুপ্ত। অসিত ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সুমন্ত গুপ্ত ও তৃণা চৌধুরীর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের রজত কান্তি গুপ্ত, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর শামসুল আলম সেলিম, তথ্যচিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদ, শামসুল  বাসিত শেরো, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ, কবি লুতফলনেসা লিলি।Bokshi
প্রদান করা হয় শ্র“তি সম্মাননা ১৪২১ বাংলা। এবার শ্র“তি সম্মাননা পান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ আরশ আলী। উল্লেখ্য বিগত বছর সমূহে ড. মকবূল হোসেন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, প্রমোদ দত্ত সহ বিভিন্ন পর্যায়ে গুণী ব্যক্তিদের শ্র“তি সম্মাননা প্রদান করে আসছে। দিনব্যাপী আয়োজনে প্রভাতি পর্বে শতকন্ঠে বর্ষবরণে অংশ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল, সিলেট অগ্রগামী বলিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ সহ বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ। সম্মেলক পরিবেশনায় প্রথমেই সংগীত পরিবেশন করে আয়োজক সংগঠন শ্র“তি-সিলেট। এরপর একে একে সম্মেলক পরিবেশনা নিয়ে আসে সিলেটের বিভিন্ন প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো। এতে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া হতে আগত ফকির আব্দুল কুদ্দুস ও তার দল, বাউল আব্দুর রহমান, লাভলী দেব, প্রদীপ মল্লিক সহ আরো অনেকের পরিবেশনা। বিকাল ৪টা অনুষ্ঠিত হয়েছে বাউল মেলা, রাধা রমণের গান। দিনব্যাপী আয়োজনে সমবেত সংগীত পরিবেশন করে জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ, সংগীত পরিষদ, গীতবিতান-বাংলাদেশ, দ্বৈতস্বর, রেডিও অ্যানাউন্সার ক্লাব, নৃত্যাশ্রম, শ্রীনিকেতন, শিকড়-  শা.বি.প্র.বি, ছন্দনৃত্যালয়, দীপশিখা সংগীত একাডেমী, আনন্দ সংগীত বিদ্যালয়, বকুলতলা, গাংচিল সিলেট, মৃত্তিকায় মহাকাল, দ্বৈতস্বর, সুরের ভুবন, নৃত্যাশ্রম, নাট্যম সংগীত বিদ্যালয়, তারুণ্য, সারেগামা।
এছাড়া সারা দিনব্যাপী  আয়োজনে ছিল বৈকালিক পর্ব। ছিল বিষয় এবং বিভাগ ভিত্তিক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা-সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা। চিত্রাংকন ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। উৎসব অঙ্গনে ছিল বৈশাখী মেলা এতে অংশ নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রদর্শিত হয় নানা গ্রামীণ সামগ্রী।সারা দিনব্যাপী আয়োজন জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : জকিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন বর্ষবরণ উপলক্ষে উপজেলা কমপ্লেক্স শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। এছাড়া শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির বর্ষবরণ উপলক্ষে র‌্যালি ও সমাবেশ করেছে। শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন জকিগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক, জকিগঞ্জ টুডের সম্পাদক শ্রীকান্ত পাল, সাংবাদিক আল মামুন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ, পৌরসভা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জকির হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা বেলাল আহমদ, সমাজসেবী কালাম আহমদ, শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক আসাদ আহমদ সহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পকলা একাডেমী : হাজারো মানুষের ঢল, মুহুর্মুহুর করতালি, বর্ণিল আয়োজন এবং গান, কবিতা ও নৃত্যের মূর্ছনায় নতুন বছরকে বরণ করে নিল জেলা শিল্পকলা একাডেমী সিলেট। বাহারী রকমের আল্পনা, ম্যুরাল, নিয়ন আলো ও বর্ণিল সাজে শিল্পকলাকে দৃষ্টিনন্দিত করেছে একাডেমীর চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা যা ছিল চোখে পড়ার মতো।
সকাল ৮টায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, ঢাকের বাদ্য আর ‘একশো এক কণ্ঠে’ এসো হে বৈশাখ এসো এসো এই গান ও নৃত্যের মূর্ছনায় শুভ উদ্বোধন ঘটে বর্ষবরণ উৎসবের। জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্তের সভাপতিত্বে উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম। উৎসবটির শুভ উদ্বোধন করেন প্রবীণ লোকসংগীত শিল্পী সুষমা দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট লেডিস ক্লাবের সভানেত্রী শাহনাজ ইসলাম, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা সিলেট জেলা শাখার সভাপতি অনিলকিষণ সিংহ, কবি ও গবেষক শুভেন্দু ইমাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এ কে শেরাম, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও প্রশিক্ষক হিমাংশু বিশ্বাস, তথ্যচিত্র নির্মাতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক নিরঞ্জন দে, বিশিষ্ট সাংবাদিক আজ আজাদ এবং উন্নয়ন সংগঠক নজমূল হক। “এসো মিলি প্রাণের উৎসবে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭:৩০টা পর্যন্ত দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সিলেটের প্রায় ২৫টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বৈশাখের গান, লোকসংগীত, কাঠিনৃত্য, ঝুমুর নৃত্য, লোকনৃত্য, লাঠি খেলা, একক ও সম্মেলক সংগীত, বৃন্দ আবৃত্তি, জারিগান, ধামাইল, মণিপুরী নৃত্য, আবৃত্তি, বাউলগান এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বিশিষ্ট শিল্পীবৃন্দের একক পরিবেশনা মুগ্ধ করে আগত দর্শকদের। সাংস্কৃতিক পর্বে দলীয় পরিবেশনায় শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগ, গীতবিতান বাংলাদেশ, চারুবাক, মুক্তাক্ষর, শ্রীনিকেতন, দ্বৈতস্বর, সুরাঞ্জলী, ডিকেএফ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশু বিদ্যালয়, নাট্যম সংগীত বিদ্যালয়, একাডেমী ফর মণিপুরী কালচার এন্ড আর্ট, মৃত্তিকায় মহাকাল, ছন্দনৃত্যালয়, কালচারাল ক্লাব নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, মোহনা এমসি কলেজ, নীলম লোক সংগীতালয় প্রমুখ এবং একক পরিবেশনা ও পরিচালনায় ছিলেন সুষমা দাস, হিমাংশু বিশ্বাস, চিত্তরঞ্জন দেব, জামালউদ্দিন হাসান বান্না, বাউল আব্দুর রহমান, বাউল সূর্য্যলাল দাস, অংশুমান দত্ত অঞ্জন, শামীম আহমেদ, লাভলী দেব, জ্যোতি ভট্টাচার্য্য, অনিমেষবিজয় চৌধুরী, বিপুল শর্মা প্রমুখ।
জাতীয় মহিলা সংস্থা : বাংলা নববর্ষ ১৪২২ উপলক্ষে জাতীয় মহিলা সংস্থা সিলেট অফিসে শাহ জালাল উপশহর কার্যালয়ে মিষ্টি বিতরণ করে বৈশাখী উৎসব পালন করছেন জাতীয় মহিলা সংস্থার নেতৃবৃন্দ। উক্ত উৎসবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান বেগম কবি ফাতেমা ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার সদস্য আলহাজ্ব সালমা বাছিত, বেগম সামসুল নাহার মিনু, বেগম জোস্না দাস, এছারাও উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল লতিফ, প্রশিক্ষক এনাম আহমদ, অফিস সহায়ক ও প্রশিক্ষণার্থীরা।
এক্সেলসিয়র সিলেট : বাঙালি ঐতিহ্যের প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এক্সেলসিয়র সিলেট হোটেল এন্ড রির্সোট বৈচিত্র্যময় নানান কর্মসূচির মধ্যে এবার পালন করছে শুভ নবর্বষ। সকাল ১০টায় সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটির আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সকাল ৯টায় নগরীর সুবিদবাজার পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে খাদিমনগরের হোটেল এক্সেলসিয়র গিয়ে শেষ হয়। এক্সেলসিয়র সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট এর এমডি সাঈদ চৌধুরী সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সাইক্লিষ্টদের অভিনন্দন জানান। পরে রিসোর্ট প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানের এমডি সাঈদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন  এক্সেলসিয়র সিলেট হোটেল এন্ড রির্সোট এর মার্কেটিং ডাইরেক্টর আহমদ আলী জিএম হুমায়ুন কবির, জিএম মার্কেটিং শিব্বির আহমদ চৌধুরী, পিআরও নিজাম উদ্দিন সালেহ, দি নিউ নেশন এর সিলেট প্রতিনিধি এস এ শফি, সিলেট সাইক্লিষ্ট কমিউনিটির মডারেটর কাজি অহিদ।
পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ থেকে জানিয়েছেন : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ ১৪২২ বাংলা বরণ উপলক্ষে  ১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি উপজেলা পরিষদ থেকে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: সিদ্দেক আলী, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মুনিম তরফদার, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ মখলিছুর রহমান, রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল, অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিঞা, অধ্যক্ষ মো: হেলাল উদ্দিন, কমলগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো: আনোয়ার হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি এম এ ওয়াহিদ রুলু, সাপ্তাহিক কমলগঞ্জ সংবাদ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, সাপ্তাহিক কমলগঞ্জের কাগজ ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মো: জুয়েল আহমদ, প্রধান সম্পাদক মো: মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক শাহীন আহমেদ, ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার পারভেজ আলালসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
র‌্যালীতে বাঙালি বর্ণিল সাজে নতুন পোষাক পরিধান করে গুণাগুণাগুণ গানে মুখরিত হয়। সকলই নেচে গেছে মাতিয়ে তুলেন।
এদিকে পতনঊষার, শমশেরনগর, আদমপুরে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে র‌্যালী হয়েছে বলে জানা যায়।