সৈয়দ সুজাত আলী
মানুষলোক চারিদিকে তোলপাড় চাপা আতঙ্ক। ব্যাপক কৌতুহল। শুধু জিজ্ঞাসা, শুনেছেন নাকি সর্বনাশ। এখনও শুানেননি আপনি দেখি কিছুই জানেন না ভাই। মানুষখেকো বৃটেনে জলজ্যান্ত মানুষ খেয়ে ফেলেছে এটাও জানেন না? এক সপ্তাহে ধরে এমন একটি ভূয়া খবর বাংলাদেশী কমিনিউনিটিতে তোলপাড় করে চলছে। গুজব সম্প্রচারিত টেলিফোনে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে, এক শহর থেকে অন্য শহরে কেউ বুঝতে রাজি নয়, বৃটেনের মতো দেশে এটা হাস্যকর। তবুও এমন একটা অর্থহীন, মূল্যহীন, উদ্ভট, বানোয়াট, ভীত্তিহীন, নির্বোধ খবরের পিছনে সপ্তাহ ধরে বাংলা কমিউনিটি বহু সময় ব্যয় করেছে, টেলিফোন বিল উঠছে, নারী ও শিশু কিশোরদের মনে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। আর বিজ্ঞানমনস্ক মানুষগুলোকে করা হচ্ছে বিরক্ত। খবরটি একেক জন একেক ভাবে বলছেন। এ ভিত্তিহীন খবরটিকে কোথা থেকে কখন কিভাবে চড়াচ্ছে না জানা গেলেও খবরটি জানতে বাকী নেই কোন বাঙালীর। পত্রিকা অফিসে প্রচুর টেলিফোন প্রমাণ করে গুজবটি কি আকার ধারণ করেছে। এজন্য বাঙালির দুঃখ ফালতু কাজে এত সময় পায় কোথায়, কারা করে এসব। এই ছিল স্থানীয় একটি বাংলা সাপ্তাহিকের খবর। এই খবর আমি প্রথম শুনি শামীমের স্ত্রীর কাছে। ভাই সাহেব জানেন লন্ডনে এক মানুষ খেকো বেরিয়েছে। সে মানুষকে খেয়ে ফেলে। আমি আশ্চর্য হলাম বিলেতের মত স্থানে বিলাতের স্কুলে লেখাপড়া করে একি কথা তিনি বলছেন। আমি বললাম, দেখেন এ রকম কিছু যদি ঘটত তবে এতক্ষণে বিলেতের পুলিশ সহ বিভিন্ন সংস্থার লোক সেখানে গিয়ে তাকে ধরে এনে পরীক্ষা করে দেখাত কেন সে মানুষ খায়। তিনি আমার সাথে একমত হলেন। ছোট বেলায় আমরা গুজব শুনতাম কোন নতুন সেতু হলে সেখানে মানুষের মাথা চাইত। আম্মা আব্বা আমাকে ঘর হতে বের হতে দিতেন না।
সবসময় চোখে চোখে রাখতেন। চারিদিকে আলোচনা এই সেতুতে মানুষের মাথা চেয়েছে। সিলেটি ভাষা বলতো “কল্লা কাটরি” বস্তা নিয়ে বেরিয়েছে, যে কোন সময় কল্লা কেটে নিয়ে যাবে। কেউ নিখোঁজ হলে গুজব উঠত “কল্লা কাঠরি” তাকে নিয়ে গেছে। আজ প্রায় ৩০ বৎসর পর লন্ডনে এই গুজব শুনে মনে হচ্ছে কত সরল আমাদের দেশের লোক। যারা এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিনে এই সব গুজবে কান দেয় ও বিশ্বাস করে। কিছুদিন পরে জানা গেল একজন কৃষ্ণাঙ্গ লোক একব্যক্তিকে কামড় দিয়ে কিছু মাংস তার শরীর থেকে নিয়ে গিয়েছিল।