বালাগঞ্জ থেকে সংবাদদদাতা :
বাল্যবিয়ে না দেয়ার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রশাসনের নিকট লিখিত অঙ্গীকার দেয়ার দুই ঘন্টা পরেই অপর এক ইউপি সদ্যস্যের নেতৃত্বে কনের মঙ্গলাচরনের কাজ বিয়েটি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার ফলশ্র“তিতে সিলেটের জেলা প্রশাসক ৬ মাসের মধ্যে বালাগঞ্জ উপজেলা কে বাল্য বিয়ে মুক্ত ঘোষণা করার যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন তা ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। স্থানীয় এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পৈলন পুর ইউনিয়নের খাডুকোনা গ্রামে মৃত ভুপেন্ড সূত্রধরের মেয়ে স্বপ্ন রানী সূত্রধরের (১৫) মঙ্গলাচরন ছিল ২৩ ফেব্র“য়ারী আর ২৭ ফেব্র“য়ারী বিয়ের দিন ধার্য্য করা হয়। বরের নাম বাবুল সূত্রধর সে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার সেতর পাড়া গ্রামের বাদল সুত্রধরের ছেলে। স্থানীয় এনজিও কর্মীরা এ বিয়ের আয়োজনের সংবাদটি বালাগঞ্জের ইউএনওকে জানানোর পরে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তালুকদার কে বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেন ইউএনও। এতে ইউপি চেয়ারম্যান এক দিন চেষ্টা করে বিয়ে বন্ধ করতে ব্যর্থ হন। পরে ইউএনও’র নির্দেশে বালাগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ চন্দ্র মন্ডল সাংবাদিক শাহাব উদ্দিন শাহিন, ওসমানীনগর থানার এসআই প্রভাকর সহ একদল পুলিশ ২৩ ফেব্র“য়ারী কনের বাড়ীতে গিয়ে মঙ্গলাচরনের আয়োজন দেখেন এবং বিয়ের সত্যতা পান। এ সময় কনের ভাই শংকর সূত্রধরকে বলা হয় ১৮ বছরের পূর্বে তার বোনকে বিয়ে না দেয়ার জন্য। তাছাড়া বিয়ে না দেয়ার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা কনের ভাইর কাছ থেকে লিখিত অঙ্গিকার নামা আনতে চাইলে ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাদল এতে বাধা দেন এবং কনের ভাই বাদলকে স্বাক্ষর দিতে নিষেধ করেন। ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান প্রশাসনের লোকজনের সম্মুখে দম্ভোক্তি করে বলেন আমাদেরকে থানায় নিয়ে যান তবুও অঙ্গীকার নামায় কোন স্বাক্ষর দেয়া যাবে না। এমনকি ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাদল ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা নারী এনজিও কর্মীদেরকে নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। এমতাবস্থায় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আং নুর ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তালুকদার মঙ্গলাচরন এবং বিয়ে বন্ধ করার বিষয়ে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করলে কর্মকর্তারা চলে আসেন। এর ঠিক ২ঘন্টা পরেই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে মঙ্গলাচরনের কাজটি তড়িৎ শেষ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ঐ দিন রাতেই কনের বাবা শংকর সূত্রধরের বাড়ীতে একটি বৈঠক বসে। বৈঠকে গ্রামের মান সম্মান নষ্ট করা হয়েছে বলে এনজিও কর্মী রেবাকে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে দায়ী করা হয়। স্থানীয় ভাবে প্রশ্ন উঠেছে অন্য ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাদল এ বিয়েতে সংশ্লিষ্ট হলেন কেন? প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেয়া এই ইউপি সদস্যের খুঁটির জোর নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। ২৪ ফেব্র“য়ারী অনুষ্ঠিত উপজেলা এনজিও সমন্বয় সভায় এনজিও কর্মী রেবা সূত্রধর ও বর্নালী রায় তমা এবং নিরাপদ সমিতির সভাপতি শাহাব উদ্দিন শাহীন বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিত ভাবে অবগত করেন। এ ব্যাপারে বালাগঞ্জের ইউএনও আশরাফুর রহমান বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ অভিভাবক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এই বিয়ে বন্ধের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।