কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
দেশ ব্যাপী বিরোধী জোটের টানা অবরোধ এবং হরতালে কানাইঘাটে বিএনপি ও জামায়াত জোটের নেতাকর্মীরা পুলিশের কঠোর তৎপরতা ও অব্যাহত অভিযানের ফলে রাজপথে কোন ধরনের কর্মসূচী পালন করা তো দূরের কতা বাসা বাড়ীতেও থাকতে পারছে না। কিন্তু তার পরেও প্রতিদিন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করে। অবরোধের শুরুতে সড়কের বাজারে গাড়ী পোড়ানোর বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরকৃত এ মামলায় এজাহার বর্হিভূত আসামী দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাটাচ্ছে পুলিশ। বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন পুলিশী হয়রানি গ্রেফতার ও নির্যাতনের কারণে তাদের শত শত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গ্রেফতারের ভয়ে হাটবাজারেও যেতে পারছেন না তারা। দলের অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকেও পুলিশ গ্রেফতার করছে। টানা অবরোধ ও হরতালের সমর্থনে মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়া হলে পুলিশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের মিছিল করতে নিষেধ করে থাকে। মিছিল করলে সবাইকে গ্রেফতার, বাড়ী-ঘরে থাকতে দেওয়া হবে না এমনকি গুলি করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাশানো হয় তাদের। তাদের অভিযোগ অবরোধ শুরু হওয়ার তৃতীয় দিনে উপজেলার সড়কের বাজারের অদূরে একটি পিকআপ ও লেগুনায় অগ্নিসংযোগ করে কে বা কারা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলেও বিশেষ ক্ষমতা আইনে সড়কের বাজার এলাকার বেশ কয়েকজন বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের আসামী করে মামলা করা হয়। বর্তমানে পুলিশ প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে তাদের নিরীহ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করে উক্ত মামলার এজাহার বহির্ভূত আসামী দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করায় মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সম্প্রতি গত ৩ দিনে পুলিশ কানাইঘাট সদর ইউপি বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলা উদ্দিন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী ফারুক আহমদ, সাতবাঁক ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য যুবদল কর্মী হেলাল উদ্দিন মামুন, কানাইঘাট পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন, ছাত্রদল কর্মী জাকারিয়া, জামায়াত কর্মী এখলাছুর রহমান সহ কয়েকজনকে আটক করে সড়কের বাজারে গাড়ী পুড়ানো মামলায় এজাহার বহির্ভূত আসামী দেখিয়ে জেল হাযতে সোপর্দ করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের স্বজনদের অভিযোগ যাদেরকে আটক করে উক্ত মামলার আসামী দেখিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে তারা নিম্নতম ঘটনার সাথে জড়িত নয়। গাড়ী পুড়ানোর ঘটনার স্থান থেকে কারো কারো বাড়ী ২৫/৩০ কিলোমিটার দূরে। বিভিন্ন অনুসন্ধান ও নানা সূত্রে জানা গেছে, সড়কের বাজার এলাকায় গাড়ী পোড়ানোর ঘটনার সাথে স্থানীয় শিবিরের ১০/১৫ জন নেতাকর্মী জড়িত। জড়িতদের কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছেন না বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। যারা প্রকৃতপক্ষে নাশকতা মূলক তৎপরতা চালাচ্ছে তাদেরকে আটক করতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। নিরীহদের ধরে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আসামী করায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে জনমনে। এদিকে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী সমর্থকরা গ্রেফতারের ভয়ে বর্তমানে বাড়ী ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে করে অনেক পরিবার আর্তিক অভাব অনটনে পড়েছেন। একাধিক দায়েরকৃত মামলায় বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতের অর্ধশতাধিকের উপরে নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। মামলা মোকদ্দমা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আরো কয়েক শ’ নেতাকর্র্মী। থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী বরাবর জানিয়েছেন, যারা নাশকতা করছে তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করছে, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কাউকে অযথা হয়রনি করা হবে না। বিশেষ ক্ষমতা আইনের দায়েরকৃত গাড়ী পুড়ানো মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই কামালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিএনপি, জামায়াতের যে সকল নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা নাশকতার সাথে জড়িত বিধায় উক্ত মামলায় তাদের এজাহার বর্হিভূত আসামী করা হয়েছে।