কাজিরবাজার ডেস্ক :
টানা অবরোধ-হরতালে সিলেটের পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে গত ৩০ দিনে সিলেট বিভাগে ৩৯টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ট্রাকচালক বকুল দেব নাথ। দগ্ধ হয়েছেন ৩ জন।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অর্থরিটির (বিআরটিএ) হিসাবে ৩৯টি যানবাহন হলেও পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, আগুন ও ভাংচুরের ফলে অন্তত ১৫০ যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন। একজন মারা গেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে ঢাকায় পাঠানোর কার্যক্রম চলছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, এ বিভাগের ৪ জেলার মধ্যে সিলেট জেলায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ সর্বোচ্চ। সিলেটে ১১টি, হবিগঞ্জে ৫টি ও মৌলভীবাজারে ৩টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও হবিগঞ্জে ১৪টি, সুনামগঞ্জে ৫টি ও মৌলভীবাজারে একটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়েছে। সিলেটে আগুনে দগ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি মারা যান। দগ্ধ হয়েছেন আরো ৩ জন। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানিয়েছেন, আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ পাওয়া গেছে। স্থানীয় পত্র-পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২২টি যানবাহনের আগুন ও ৪৫টি যানবাহন ভাংচুর করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫টি বাস, ২১টি ট্রাক, ৪টি প্রাইভেট কার, ১১টি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ২৫টি লেগুনা ও ১টি কাভার্ড ভ্যান আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বাকী যানবাহন ভাংচুর করা হয়।
গত ২০ জানুয়ারি গোয়াইনঘাটে পেট্রলবোমায় আহত ট্রাকচালক বকুল দেব নাথ (২৫) ২৭ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে মারা যান।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার বলেন, অবরোধ ও হরতালে সিলেট বিভাগে শুধুমাত্র ৩৫টি ট্রাকে আগুন ও ভাংচুর করা হয়। ১৫-১৬জন শ্রমিক আহত হন ও একজন মারা গেছেন। সরকারের আশ্বাস পাওয়ার কারণেই শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা এখনো রাস্তায় আছেন। সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্র“পের সভাপতি আবুল কাহের ইজু বলেন, মৃত্যু ঝুঁকি নিয়েই শ্রমিকরা সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন নিয়ে চলাচল করছেন। ট্রাকে মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও যানবাহন মালিকদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে সরকার ঘোষণা দেয়ায় রাস্তায় প্রতিদিন অনেকে যানবাহন নিয়ে নামছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন এজন্যে তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, আগুন ও ভাংচুরের ফলে সিলেট বিভাগে গত এক মাসে অন্তত ১৫০টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনে দগ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন ও আহত হয়েছেন ২০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের তালিক তৈরি করা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৩ জনের একটি তালিকা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত সকল শ্রমিকের তালিকা ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে এমন আশ্বাসের ফলে এই তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।