স্টাফ রিপোর্টার :
অবরোধে নাশকতা রোধে ও নানা অপরাধী শনাক্তে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরায় নগরীকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ। এতে নাশকতাকারীদের ছবি সংগ্রহ করে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে বেশ কিছু অপরাধী ধরেছে পুলিশ।
নগরী ঘুরে ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সিলেট নগরীর ব্যস্ততম ও ঝুঁকিপূর্ণ ২০ টি পয়েন্টে ৫২ টি গোপন ক্যামেরা বসিয়েছে এসএমপি পুলিশ। নাইওরপুলে সিলেট মহানগর পুলিশের সদরদপ্তরে একটি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) বসিয়ে নগর সড়কগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এসব ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও চিত্র থেকে সিলেটে অবরোধে নাশকতাকারীদের গ্রেফতারে স্থির চিত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের একটি টিম ভ্রাম্যমান গোপন পর্যবেক্ষণ রুম বসিয়েও এসব ক্যামেরার চিত্র নজরদারি করছে।
পুলিশ জানায়, হরতাল-অবরোধে মিছিল বের করে নাশকতা অবরোধকারীরা। তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। বিভিন্ন পয়েন্টে গোপন ক্যামেরা বসানোয় তাদের শনাক্ত করা সহজ হচ্ছে। পাশাপাশি মিছিলের প্রস্তুতির সময় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হচ্ছে। মিছিল ছত্রভঙ্গও করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার সিসি ক্যামেরার সাহায্যে নগরীর চৌহাট্টা ও দর্শনদেউড়ী থেকে পুলিশ ১২ জন ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির কর্মীকে আটক করেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামানের গাড়ি লক্ষ্য করে কুমারপাড়ায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করেছিল শিবির কর্মীরা। এ ঘটনার পর সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে পুলিশ ৬ শিবির কর্মীকে ওই এলাকা থেকে আটক করে।
এসএমপির ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানায়, পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের কারণে সিলেটে হরতাল ও অবরোধের সমর্থনে ২০ দলীয় জোটের কর্মীরা তেমন মিছিল-সমাবেশ করতে পারছেন না। তবে ছাত্রদল ককটেল ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে শিবির কর্মীরা একের পর এক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে। তাদের আক্রমণ থেকে পুলিশও রেহাই পাচ্ছে না। এ অবস্থায় নাশকতাকারীদের শনাক্ত করতে নগরীকে গোপন ক্যামেরায় আওতায় আনা হয়েছে। কোথাও নাশকতা হলে সেখানকার গোপন ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হচ্ছে অপরাধীদের। এরপর নাশকতাকারীদের ছবি নিয়ে চালানো হচ্ছে অভিযান।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, মেডিকেল রোড, শেখঘাট, সুবিদবাজার, শাহী ঈদগাহ, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, শিবগঞ্জসহ কয়েকটি স্থানে বসানো হয়েছে গোপন ক্যামেরা। সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও বসানো হয়েছে বেশ কিছু ক্যামেরা। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনেও ব্যক্তি উদ্যোগে ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সরকারের স্থাপনাগুলোর সামনে স্টীলের খুঁটিতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ বলেন, ‘সিলেট মহানগর পুলিশ, সিটি করপোরেশন, ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে অপারেশন চালানো হচ্ছে।’