স্টাফ রিপোর্টার :
‘কেন আমার ছেলের প্রতি এত নির্মম আচরণ? আমার অসুস্থ ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও’-এভাবেই কারান্তরীণ সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মা আমিনা খাতুন সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেছেন। গতকাল বুধবার এই খোলা চিঠি সিলেট নগরীতে প্রচারপত্র হিসেবে বিলি করা হয়। খোলা চিঠিটির প্রচারে ‘আরিফুল হক চৌধুরী মুক্তি পরিষদ’র নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে, খোলা চিঠির বিষয়ে মুক্তি পরিষদের কেউ কিছু জানেন না বলে জানিয়েছে পরিষদ !
খোলা চিঠিতে আরিফের মা আমিনা খাতুন তার ‘অসুস্থ ছেলেকে’ তার বুকে ফিরিয়ে দেয়ার আকুতি জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যারা ভালোবেসে বিগত নির্বাচনে আরিফুল হক চৌধুরীকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন আমি তার মা। আজ আমি বড় অসহায়, হৃদয় আমার ভারাক্রান্ত, অসুস্থ হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পুত্রের দুশ্চিন্তায় দিশেহারা। শেষ বয়সে এসেও নির্ঘুম রাত কাটছে আমার। কোন পথ খুঁজে না পেয়ে আমি আমার সবচে আপনজন এই সিলেটের মানুষের দ্বারস্থ হয়েছি। যেভাবে আমার সন্তানও নির্বাচনের সময় আপনাদের কাছে শেষ আশ্রয় খুঁজেছিল।’
আমিনা খাতুন নিজেকে ‘মেয়রের মা হিসেবে নয়, একজন অসুস্থ ও বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার এক ছেলের অসহায় মা হিসেবে’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আরিফুল হক চৌধুরী শুধু আমার সন্তান নয়, যেদিন থেকে সে নগরবাসীর জন্য কাজ শুরু করেছিল, সেদিন থেকে আমি তাকে আপনাদের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছি। তাই আরিফ আপনাদের সন্তান, আপনাদের ভাই, আপনাদের আপনজন বললেও ভুল হবে না।’
আরিফকে ছোটবেলা থেকেই আমিনা খাতুন ‘মানবতার সেবায় কাজ করার শিক্ষা দিয়েছেন’ উল্লেখ করে বলেন, এসব কাজ করতে গিয়ে তাকে অনেক বিপদ মোকাবেলা করতে হয়েছে। দুই দুইবার সে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিল।’
তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘সুস্থ হয়ে আমার ছেলে নগরবাসীর জন্য কাজ শুরু করতে না করতেই তার সামনে আবার নতুন বিপদ হাজির হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, আমার ছেলে এ রকম কোনো অপরাধ করতেই পারে না। সিলেটের সকল মানুষই জানেন, এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র। আমি জানি আমার ছেলে নির্দোষ।’
‘সিলেটবাসীই এখন আমাদের অভিভাবক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে আমার ছেলের জন্য দোয়া চাইছি। আর সরকারের কাছে আকুতি জানাচ্ছি, আমার অসুস্থ ছেলেটাকে আমার বুকে ফিরিয়ে দিন।’
এদিকে, এই খোলা চিঠির বিষয়ে আরিফ মুক্তি পরিষদের কেউ কিছু জানেন না! সিলেটে আরিফ মুক্তি পরিষদ ভেঙে গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এই পরিষদের সদস্যরা ভীত হয়ে পরিষদ থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে সদস্য সচিব অধ্যক্ষ ফরিদ আহমদ অব্যাহতি নিয়েছেন। তিনি বলেন,‘ আমি এসব বিষয়ে সময় দিতে পারবো না। তাই নাসিম হোসেন (সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য) কাছে গিয়ে বলেছি, আমি পরিষদে থাকতে পারবো না।’