কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়া উপজেলার মনু ও টিলাগাঁও ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে সংঘটিত ট্রেন দুর্ঘটনায় নাশকতার মামলা দায়েরের পর থেকে পার্শ্ববর্তী দুটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে মানুষের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশে ধরিয়ে দেয়া আর মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি হয়রানী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যে স্থানটিতে গত ৮ জানুয়ারি ভোর রাতে আন্ত:নগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা কবলিত হয় তার নিকটবর্তী উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের লহরাজপুর, সালন, আশ্রয়গ্রাম, বালিয়া, চকসালন ও ইছবপুর এবং হাজীপুর ইউনিয়নের কটারকোনা, হাসিমপুর, জালালপুর, গাজীপুর ও হাজীপুর গ্রাম। এসব গ্রামে বসবাসকারী ও শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত কয়েকদিনে কুলাউড়া থানা পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করে আবার ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশের দায়িত্বশীলরা বলছেন, যাদের আটক করে আনা হয়েছে, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এই ধরা আর ছাড়া নিয়ে এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি এখন বাণিজ্যে নেমেছে। তারা নিরীহ মানুষকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার নামে হুমকি ধামকি দিয়ে টাকা তুলছে।
হাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমুজ মিয়া জানান, ইসমাইল পুর গ্রামের মনা ও নজরুল নামের ২ ব্যক্তি তালিকা করে মানুষকে কথিত সেই তালিকা থেকে নাম কাটানোর নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলছে।
এদিকে মানুষকে হয়রানির প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে কটারকোনা বাজারে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম।
হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানান, পুলিশের সাথে যোগসাজশে কারা এসব করছে তা খুঁজে বের করার জন্য আমি স্থানীয় একটি সভায় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, রেলওয়ের নাশকতা মামলায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে শনাক্ত করে তারপর আটক করা হবে। রেলওয়ে পুলিশ আটকের জন্য এখনও কোন অভিযান চালায়নি। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোন নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হবে না।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি যাতে কোন নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়।