কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার মডেল থানার বকশীবাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
বকশিবাজার আলীয়া মাদ্রাসায় অবস্থিত বিশেষ আদালতের বাইরে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে আটককৃতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরে আদালতের বাইরে অবস্থান নেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে বিএনপি সমর্থকদের উপর হামলা চালায় । এ সময় দুই পক্ষ লাঠি, বাঁশ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ও পরস্পরের দিকে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ সময় ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল ছোঁড়ে। এদিকে খালেদার হাজিরাকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কায় ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বকশিবাজার মোড়ে একটি প্রাডো গাড়ি আগুনে পোড়া অবস্থায় দেখা যায়।
চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলাম জানান, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে পরিচালিত আদালত এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়ার হাজিরা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সে জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আদালত ও এর আশপাশের এলাকার বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়েছেন এ মামলার নতুন বিচারক। ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে বাদীর সাক্ষ্য শোনার জন্য ৭ জানুয়ারি নতুন দিন ধার্য করেন। একই দিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
খালেদার হাজিরা ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই পুলিশ বকশীবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাস ও আশপাশের সড়কগুলোতে সাঁজোয়া যান ও জলকামান নিয়ে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। যানবাহন ও মানুষ চলাচলের উপরও আরোপ করা হয় কড়াকড়ি। খালেদা জিয়া আসার আগেই এ মামলার বিষয়ে উচ্চ আদালতে করা আবেদনের কথা জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। এ মামলার দায়িত্ব পাওয়া নতুন বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ১৫ মিনিটের সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে খালেদার আবেদন মঞ্জুর করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে অর্থ আত্মসাতের মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও আসামি। মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক আমলা ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান এ মামলার আসামি। সালিমুল ও শরফুদ্দিন জামিনে রয়েছেন। কামাল সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।