স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে আন্দোলনের আগেই কমিটি নিয়ে আর ‘তুই চোর তুই চোর’ শ্লোগানে রাজপথ কাঁপিয়ে দুমড়ে গেছে বিএনপি। নিজেদের অর্ন্তদ্বন্দ্ব সামাল দিতেই ব্যস্ত বিএনপি নেতারা। এই কোন্দলের কারণে দলটি রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে পারছে না কিছুতেই। উল্টো দলটির সিলেটে ঐক্য ভেঙে পড়ছে। এতে ক্ষুব্ধ দলটির ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্র জানায়, সরকারের কঠোর মনোভাব আর মামলার ঘেরাটোপে বন্দী হয়ে পড়েছে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীরা। মূলত সিলেট বিএনপি কান্ডারী হয়ে ওঠা ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর থেকে সিলেটে ধীরে ধীরে বিবর্ণ হতে থাকে দলের একতা। ইলিয়াস আলীর পর সিলেটে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো সেই মাপের কোনো নেতা না থাকায় অনেকটাই দিকনির্দেশনাহীন হয়ে পড়েন দলটির নেতাকর্মীরা। যে কারণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তৃণমূলের সাথে সিলেটে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়তে থাকে। সেই দূরত্ব এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের তৃণমূূল নেতাকর্মীরা কি চায়, কিভাবে চায়, সেসবকে গুরুত্ব দেয়া তো দূরের কথা, শুনতেই চাইছেন না দলটির প্রধান সারির নেতারা। যার কারণে ক্ষোভ আর হতাশা দানা বেঁধে আছে তৃণমূল বিএনপিতে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে এই আহবায়ক কমিটির মেয়াদ ছিল ৪৫ দিন। কিন্তু দীর্ঘ ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও আহবায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। তবে ১৩ উপজেলা ও ৪ পৌরসভার ১৭ কমিটির মধ্যে নতুন করে ৯টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকিগুলোও ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতারা। এদিকে, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে একজন আহবায়ক ও ৮ জন যুগ্ম আহবায়ক রয়েছেন। এর যুগ্ম আহবায়ক সামসুজ্জামান জামান ও এমরান আহমদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাজ্যে। তাদেরকে ছাড়াই চলছে জেলা বিএনপির কর্মকান্ড।
অন্যদিকে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল এবং সর্বশেষ মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে তুঘলকি কান্ড চলছে সিলেট বিএনপির মূল নেতৃত্বের মধ্যে। সম্প্রতি জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে কমিটির নেতাদের প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। এর জের ধরে কমিটির পক্ষ ও কমিটির বিপক্ষ নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। নবগঠিত জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি সাঈদ আহমদ জেলও খাটেন। ছাত্রদলের মধ্যকার এই বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। বিদ্রোহীরা এখনো মেনে নেয়নি জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটিকে।
ছাত্রদলের এই বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই খোদ মূল সংগঠন বিএনপিতেই দেখা দিয়েছে বিরোধ। কয়েকদিন আগে সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা। ঘোষিত কমিটিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরীর ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এই কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শমসের মুবিনের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল, জুতা প্রদর্শন, তার ছবিতে লাথি, থুথু নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে। সিলেট বিএনপি তারই দলের নেতা শমসের মুবিনকে ‘তুই চোর তুই চোর’ শ্লে¬াগানে মিছিল করেছে। এতেই তৃণমূল কর্মীদের কাছে সিলেট বিএনপির ঐক্য নিয়ে হতাশা কাজ করছে।
তবে বিদ্রোহীদের অনেকটা পাত্তা না দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মহানগর কমিটি। ইতিমধ্যেই মহানগরের আওতাধীন ৬টি থানা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে থানার সাংগঠনিক সীমানা নির্ধারণের জন্য ৫ সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী ১০ ডিসেম্বরের ভিতরে পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ আহবায়ক ও সদস্য সচিব বরাবরে প্রেরণ করার জন্য বলা হয়েছে। মহানগর বিএনপির অন্তর্গত ২৭ ওয়ার্ডের সাংগঠনিক আহবায়ক কমিটির গঠনের লক্ষ্যে ৬টি উপ কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে,একতা নেই, তারপরও আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পর কেন্দ্রীয় বিএনপি সরকারবিরোধী সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিলে সিলেটে বিএনপি কতোটুকু কি করতে পারবে, সেই সন্দেহ কাজ করছে তৃণমূল আর রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি বলেন, ‘বড় দলে কিছু মতবিভেদ থাকবেই। সব কিছু আন্দোলনের আগেই ঠিক হবে। ’
সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলী আহমদ বলেন, ‘অন্যসব দলগুলোর মতো বিএনপিতেও কিছু মত পার্থক্য রয়েছে। তবে এসব ঠিক হয়ে যাবে।
স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটে আন্দোলনের আগেই কমিটি নিয়ে আর ‘তুই চোর তুই চোর’ শ্লোগানে রাজপথ কাঁপিয়ে দুমড়ে গেছে বিএনপি। নিজেদের অর্ন্তদ্বন্দ্ব সামাল দিতেই ব্যস্ত বিএনপি নেতারা। এই কোন্দলের কারণে দলটি রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে পারছে না কিছুতেই। উল্টো দলটির সিলেটে ঐক্য ভেঙে পড়ছে। এতে ক্ষুব্ধ দলটির ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্র জানায়, সরকারের কঠোর মনোভাব আর মামলার ঘেরাটোপে বন্দী হয়ে পড়েছে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীরা। মূলত সিলেট বিএনপি কান্ডারী হয়ে ওঠা ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর থেকে সিলেটে ধীরে ধীরে বিবর্ণ হতে থাকে দলের একতা। ইলিয়াস আলীর পর সিলেটে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো সেই মাপের কোনো নেতা না থাকায় অনেকটাই দিকনির্দেশনাহীন হয়ে পড়েন দলটির নেতাকর্মীরা। যে কারণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তৃণমূলের সাথে সিলেটে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়তে থাকে। সেই দূরত্ব এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের তৃণমূূল নেতাকর্মীরা কি চায়, কিভাবে চায়, সেসবকে গুরুত্ব দেয়া তো দূরের কথা, শুনতেই চাইছেন না দলটির প্রধান সারির নেতারা। যার কারণে ক্ষোভ আর হতাশা দানা বেঁধে আছে তৃণমূল বিএনপিতে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে এই আহবায়ক কমিটির মেয়াদ ছিল ৪৫ দিন। কিন্তু দীর্ঘ ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও আহবায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। তবে ১৩ উপজেলা ও ৪ পৌরসভার ১৭ কমিটির মধ্যে নতুন করে ৯টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকিগুলোও ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতারা। এদিকে, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে একজন আহবায়ক ও ৮ জন যুগ্ম আহবায়ক রয়েছেন। এর যুগ্ম আহবায়ক সামসুজ্জামান জামান ও এমরান আহমদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাজ্যে। তাদেরকে ছাড়াই চলছে জেলা বিএনপির কর্মকান্ড।
অন্যদিকে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল এবং সর্বশেষ মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে তুঘলকি কান্ড চলছে সিলেট বিএনপির মূল নেতৃত্বের মধ্যে। সম্প্রতি জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে কমিটির নেতাদের প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। এর জের ধরে কমিটির পক্ষ ও কমিটির বিপক্ষ নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। নবগঠিত জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি সাঈদ আহমদ জেলও খাটেন। ছাত্রদলের মধ্যকার এই বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। বিদ্রোহীরা এখনো মেনে নেয়নি জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটিকে।
ছাত্রদলের এই বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই খোদ মূল সংগঠন বিএনপিতেই দেখা দিয়েছে বিরোধ। কয়েকদিন আগে সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা। ঘোষিত কমিটিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরীর ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এই কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শমসের মুবিনের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল, জুতা প্রদর্শন, তার ছবিতে লাথি, থুথু নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে। সিলেট বিএনপি তারই দলের নেতা শমসের মুবিনকে ‘তুই চোর তুই চোর’ শ্লে¬াগানে মিছিল করেছে। এতেই তৃণমূল কর্মীদের কাছে সিলেট বিএনপির ঐক্য নিয়ে হতাশা কাজ করছে।
তবে বিদ্রোহীদের অনেকটা পাত্তা না দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মহানগর কমিটি। ইতিমধ্যেই মহানগরের আওতাধীন ৬টি থানা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে থানার সাংগঠনিক সীমানা নির্ধারণের জন্য ৫ সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী ১০ ডিসেম্বরের ভিতরে পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ আহবায়ক ও সদস্য সচিব বরাবরে প্রেরণ করার জন্য বলা হয়েছে। মহানগর বিএনপির অন্তর্গত ২৭ ওয়ার্ডের সাংগঠনিক আহবায়ক কমিটির গঠনের লক্ষ্যে ৬টি উপ কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে,একতা নেই, তারপরও আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পর কেন্দ্রীয় বিএনপি সরকারবিরোধী সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিলে সিলেটে বিএনপি কতোটুকু কি করতে পারবে, সেই সন্দেহ কাজ করছে তৃণমূল আর রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি বলেন, ‘বড় দলে কিছু মতবিভেদ থাকবেই। সব কিছু আন্দোলনের আগেই ঠিক হবে। ’
সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলী আহমদ বলেন, ‘অন্যসব দলগুলোর মতো বিএনপিতেও কিছু মত পার্থক্য রয়েছে। তবে এসব ঠিক হয়ে যাবে।