সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাটে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া

85

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদাতা :
সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা গুলোতে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা সীমান্ত এলাকার বিছনাকান্দি, দমদমা, লক্ষণছড়া, কুলুমছড়া, সোনারহাট, পান্তুমাই, প্রতাপপুর, পুরাতন সংগ্রাম পুঞ্জি, সোনাটিলা, তামাবিল, আমস্বপ্ন মিত্রি মহলসহ উপজেলার ৫টি সীমান্ত ফাঁড়ির আশপাশের অর্ধশতাধিক সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে চোরাই পথে বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য সামগ্রী আনছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ও বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্তবর্তী দেশ ভারত থেকে অবাধে নিয়ে আসছে মরণ নেশা মদ, ফেনসিডিল, বিয়ার, গাঁজা, হেরোইনসহ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট। গোয়াইনঘাটের সীমান্ত এলাকাগুলো এখন অপরাধ ও মাদকের অভয়ারণ্য পরিণতি। যার ফলে এসব এলাকার উঠতি বয়সের তরুণরা মাদকের দিকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এতেকরে এলাকায় চুরি-ডাকাতিসহ নানারকম অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ার সুবাধে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে মাদক আমদানী করতে সহজ হওয়ায় চোরাকারবারীরা এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে পুলিশ ও বিজিবি‘র টহল জোরদার থাকলেও তেমন একটা কাজে আসছে না বলে সচেতন মহলের অনেকেই অভিযোগ করেন। চোরকারবারীরা অনায়াসে নিয়ে আসছে শাড়ী, থ্রীপিস, গরু, কাঁচামাল সহ অন্যান্য মরণ নেশা মাদক। আর এগুলো পাচার করছে শহর‘র নামিদামী হোটেল, পর্যটন মোটেল ও মার্কেট গুলোতে। আর রাতের আঁধারে এসকল মাদক পাচার হচ্ছে সিলেট শহরের নামীদামী হোটেল রেষ্ট হাউজ সহ রাজধানি ঢাকা শহরে। এ সকল মাদক পাঁচারের সহযোগী হিসাবে রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু সংখ্যক দালাল চক্র। এ দিকে পুলিশ-বিজিবি অভিযানে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তপুর ইউনিয়নের বিছনাকান্দি, হাদারপাড়, নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের মিত্রিমহল, সালুটিকর, পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সোনাটিলা, মোহাম্মদপুর, গুচ্ছগ্রাম, তামাবিল, আমস্বপ্ন, বল্লাঘাটসহ আশপাশ এলাকা থেকে  পুলিশ ও বিজিবির অভিযানে একাধিক বার মাদক উদ্ধার ও একাধিক ব্যক্তিকে আটক করলেও তা তোয়াক্কা না করেই চলছে মাদক ব্যবসা। অবাধে মাদক বিক্রি ও সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক আনার অভিযোগের ঘটনায় এখনও এলাকায় তোলপাড় চলছে।
সর্বশেষ বুধবার রাত ৯টায় গোপন সংবাদের বিত্তিতে উপজেলার বল্লাঘাট নদির পাড় এলাকা থেকে র‌্যাব ৯ এর সহ-কারি পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শতাধিক বোতল ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদসহ রাজন মালাকার ও ফখরুল ইসলাম নামে দুই জনকে আটক করেছে র‌্যাব-৯। এলাকার সচেতন মহল দাবী করছে সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল জোরদার না থাকার কারনে অবাধে মাদক আসছে এবং যুব সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ও বিজিবির নিয়মিত টহল জোরদার করার আহবান জানায় সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, মাদক আমদানী রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সবসময় তৎপর রয়েছে। তবে চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে মাদকদ্রব্য আমদানী করতে না পারে এরই লক্ষ্য বিভিন্ন পয়েন্ট চিহ্নিত করে কঠোর নজরদারী বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হাই জানান আমাদের টহল টিম মাঠে আছে, চলতি মাসে মদ, গাজা, ফেনসিডিলসহ উল্লেখ্য সংখক মাদকদ্রব্য আটক করেছে পুলিশ। কাউকে মাদক সহ যে কোনো অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে পেলে আইনের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।