মাদক সেবনকালে ॥ ছাত্রলীগ নেতার মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট থেকে আটক হওয়া ২৬ ধনীর দুুলালকে চাপের মুখে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ!!!

30

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর ধোপাদীঘিরপারে মহানগর ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ফয়েজ উদ্দিন পলাশের মালিকানাধীন ‘অলিভ ট্রি’রেষ্টুরেন্টে গত শনিবার রাতে সিসা সেবনকালে কোতোয়ালী থানা পুলিশের অভিযানে আটক হওয়া ২৬ ধনীর দুলালকে অব্যাহত অনুরোধ আর উপর মহলের চাপে শেষ পর্যন্ত ওই রাতেই ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। যদিও পুলিশ বলছে ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি যে কারণে তাদের অভিভাবকদের ডেকে মুছলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ছাড়া পাওয়া ধনীর দুলালরা হচ্ছেন- জালালাবাদ আবাসিক এলাকার ৩৫/২ বাসার মাসুকুল হক চৌধুরীর পুত্র তালহা হায়দার চৌধুরী (২৭), উপশহরের এ ব্লকের ৩ নং রোডের আফতাব চৌধুরীর পুত্র মাসুদ চৌধুরী (২৭), চৌকিদেখী রংধনু ১১ আং হামিদের পুত্র মাসুম আহমদ (২৭), ভার্থখলা  স্বর্ণালী ২০ এর মনির উদ্দিনের পুত্র আবির (২৭), সুবিদবাজার নির্ঝর ২৬ এর সোনা মিয়ার পুত্র ফারুক আহমদ (৩৭), উপশহর জি ব্লকের ৯১ নং বাসার মৃত সামছুন নূরের পুত্র সাহাজ উদ্দিন টিপু (৩৮), মিরাপাড়া এলাকার ১৬৪ নং বাসার আং মুকিতের পুত্র মমিন চৌধুরী (২১), শামীমাবাদ এলাকার ৭ নং বাসার আং হাইয়ের পুত্র কুহিনূর আহমদ,  উপশহরের এফ ব্লকের ৬৭ নং বাসার জমির মিয়ার পুত্র জাফর (২১), সুবিদবাজার ৮২/১ এর আং মান্নানের পুত্র রাসেল আহমদ (২৬), দক্ষিণ সুরমার মত সোনা মিয়ার পুত্র ইব্রাহিম খলিল মামুন (২৬), ১২৩ মধুশহীদের কামরুজ্জামানের পুত্র মুন্না (২৬), আম্বরখানা দিগন্ত ৩০ রফিক আহমদের পুত্র আবু মুসা ইমরান আং সানি (৩৪), ঢাকা মগবাজারের সমছু মিয়ার পুত্র জিএম ফারুক (৩৮), পুরান মেডিকেলের দিলীপ রায়ের পুত্র দিবাকর রায় শাওন (২৪), ৬নং তালতলা হাজি আব্দুর রউফের পুত্র শাকিল আহম (২০), ১২৮ মিরাপাড়া সামছুল ইসলামের পুত্র তানজিল (১৯), ২৭ নং ওয়ার্ড গংগানগর এলাকার আ.মান্নানের পুত্র মুস্তাক (৩১), কুমিঘাট এলাকার মৃত আখল মিয়ার পুত্র ওয়ারিছ (৫০), চালিবন্দরের ফয়েজ আলীর পুত্র নজরুল ইসলাম (২০), দিগন্ত ৩০ আম্বরখানার মৃত ময়রা মিয়ার পুত্র কিবরিয়া মিনহাজুল হক (৪০), ১১৩ লোহারপাড়া এলাকার আব্দুল আহমদ চৌধুরীর পুত্র তৌহিদ আশফাক (২৮), ১২০/ সি কাজী জালাল উদ্দিন এলাকার আং আহাদের পুত্র আবু রায়হান (২৭), চালিবন্দরের হেলার আহমদের পুত্র সাফেক আহমদ (২১), চালিবন্দরের আকিকুল ইসলামের পুত্র তোফাজুল হোসেন (২৫), একই এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র ফখরুল ইসলাম রুবেল (২২)।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এদের গ্রেফতারের পর পরই আটককৃতদের ছাড়িয়ে নিতে থানায় ছুটে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং মাহার স্বত্ত্বাধিকারী ক্রীড়া সংগঠক মাহি উদ্দিন সেলিমসহ সিলেটের বেশ কিছু পরিচিত মুখ। আটককৃতদের মধ্যে এমন বেশ কয়েকজন ছিলেন যারা তাদের নিকট আত্মীয় বলে জানা গেছে। যে কারনে পুলিশ শেষ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা না করেই তাদের চাপে আটককৃতদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। নগরীর ধোপাদীঘিরপারে অবস্থিত ছাত্রলীগ নেতার মালিকানাধীন এ রেস্টুরেন্টটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে মাদক সেবনসহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। এ  অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালালেও শেষ পর্যন্ত কোন ফলাফল আসেনি। যে কারণে এ নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান  এ প্রতিবেদককে জানান, নগরীর ধোপাদীঘিরপার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ গত শনিবার রাত ১০টায় বিশেষ অভিযান চালায় ধোপাদীঘিরপারস্থ অভিজাত রেষ্টুরেন্ট ‘অলিভ ট্রি’তে। এ সময় সেখানে সিসা সেবনরত অবস্থায় ২৬ যুবককে আটক করা হয়। এ সময় অভিযানে ৩৩টি মোবাইল ফোন, (সিলেট-ল-১১-৫৬৩৯, ঢাকা-ল-১৭-৯৮৮৭) নং ২টি মোটরসাইকেল ও সিসা সেবনের ছয়টি হুক্কা, সরঞ্জাম জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। ওসি আরো জানান, তাদের আটক হওয়া পর যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে কেউ অপরাধের সাথে জড়িত নয়। তাই তাদের অভিভাবকদের থানায় ডেকে এনে ঘটনার দিন গভীর রাতেই মুছলেখা দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।