সিলেটে রাষ্ট্রদ্রোহের ২ মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

6

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটে ছাত্রলীগ নেতাদের করা রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলায় খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রবিবার দুপুরে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের বিচারক ছগির আহমেদ মামলা দুটি খারিজ করে তারেক রহমানকে খালাস প্রদান করেন। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ২০১৪ সালে দুই ছাত্রলীগ নেতা রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দুটি দায়ের করেন। একদশক পর রবিবার আদালত মামলা দুটি খারিজ করে দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান আহমদ চৌধুরী এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি শামীম মোল্লা মামলা দুটি দায়ের করেন। ওই সময় বিচারক আনোয়ারুল হক মামলা দুটি আমলে নিয়ে সরকারের অনুমোদনক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এসএমপির শাহপরাণ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।
পৃথক অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য বিএনপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌম, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিরোধিতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেন। তবে রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়েরকৃত মামলা দুটি একদশক পর রবিবার আদালত খারিজ করে দেন।
এদিকে বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়ায় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট নগরীর কোট পয়েন্ট (শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাব চত্তর) থেকে শুরু করে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব, সহ-সভাপতি জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, সাদিকুর রহমান সাদিক, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা কামরুল হাসান শাহীন, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটওয়ারী রিপন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুর্শেদ আহমদ মুকুল, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ, মির্জা বেলায়েত হোসেন লিটন, মুফতি রায়হান উদ্দিন মুন্না, শামীম মজুমদার, আব্দুল্লাহ শফি সাহেদ, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দেওয়ান জাকির, সাব্বির আহমদ, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনারসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গসহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আজকে বিজয়ের প্রথম দিনে একটি বিজয়ের খবর, ২১ আগস্ট একটা গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। সে মামলায় তারেক রহমান সাহেব জড়িত ছিলেন না বিধায় তাকেসহ সবাইকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আমরা বিগত দিনগুলোতে ন্যায়বিচার পাইনি। আজকে ডিসেম্বরের প্রথম দিনে প্রথম একটা সুসংবাদ পেলাম। ইনশাল্লাহ! সামনে আরও সুসংবাদ আমরা আশা করছি। মিথ্যাভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের সাজানো একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ সব বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছিল। হাইকোর্ট সেই মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সরকার তারেক রহমানকে জেলে পাঠাতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অবিলম্বে তারেক রহমানের নামে যত মিথ্যা মামলা আছে সব মামলা প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশে ফিরিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে, কিন্তু তার দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি সব ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করে যাচ্ছে।