স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ব্যবসায়ীর জমি দখল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দলইরগাঁও মাঝপাড়া গ্রামের মাস্টার ইরফান আলীর পুত্র মো. বজলুর রশিদ। তিনি জমি উদ্ধার এবং পুড়িয়ে দেওয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। লিখিত বক্তব্যে বজলুর রশিদ বলেন, ‘আমার গ্রামের ফারুক চক্রের কবলে পড়ে আমি আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ফারুক ও তার ভাইয়েরা আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় কোথাও প্রতিকার পাইনি। তারা থানা পুলিশ কিংবা পঞ্চায়েত কাউকে তোয়াক্কা করেনি। ভয়ে এলাকার লোকজন তাদের অপকর্ম ও সন্ত্রাসী কর্মকাÐের প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমার ক্রয়কৃত ভ‚মি ফারুক চক্র দখল করে উল্টো হত্যার চেষ্টা করছে। লাল মিয়ার পুত্র ফিরোজ মিয়া, ফারুক মিয়া, সুরুজ মিয়া, শাহিদ আলী, ফিরোজ মিয়ার পুত্র তোফায়েল মিলে আমাকে নিঃস্ব করার পায়তারা করছে।’
বজলুর রশিদ বলেন, ‘আমার ভাই শফিকুর রহামনের স্ত্রী নেহারুন নেছার কাবিনসূত্রে প্রাপ্ত ভ‚মি থেকে ৩ শতক ভ‚মি ২০১০ সালের ৭ অক্টোবর ক্রয় করি। যার দলিল নং ১৭৩২। আমার মা সৈয়দুন নেছার ১২ শতক, আমার ভাবী নেহারুন নেছার জমিসহ মোট ১৯ শতক ভ‚মি জবরদখল করেছে ফারুক চক্র।’
তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রীর নিকট থেকে কেনা ৩ শতক ভ‚মি আমার নামে নামজারীসহ সকল রেকর্ডপত্র আমার নামে ছিল। কিন্তু প্রিন্ট পর্চা বের হওয়ার পর দেখতে পাই পর্চায় ফিরোজ মিয়া ও ফারুক গংদের নাম। এ বিষয়ে আমি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করি। যার নং ১৫৭৭/২০২২।’
তিনবার ফারুক গংদের হামলার শিকার হয়েছেন বজলুর রশিদ বলেন, ‘ফারুক গংরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। গ্রামের পঞ্চায়েতের স্মরণাপন্ন হলে কোনোভাবে সুরাহা করতে না পেরে তারা আইনের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন। সর্বশেষ গত ৯ নভেম্বর হামলার শিকার হয়েছি। কিন্তু মামলা করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি বারবার।’
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে বজলুর বলেন, ‘ফারুক গংরা শুধু জায়গা দখল কিংবা আমার ওপর হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি তারা আমার একমাত্র আয়ের উৎস রাইস মিল ও মুদির দোকান রাতের আঁধারে পুড়িয়ে দিয়েছিল। পুড়িয়ে দেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতেও তারা বাধা দেয়। পরে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় তা সংস্কার করলেও বিদ্যুৎ সংযোগে তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’
সন্ত্রাসী ফারুক ও শাহিদ আলী মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মাদক মামলায় ফারুক জেলও খেটেছে। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হলেও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ফারুক গংরা এখনও বেপরোয়া।’
বজলুর রশিদ ফারুক গংদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিনিয়োগের টাকাও হারিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘ফারুক আমার সাথে এই সব ঘটনার আগে ধোপাগুলের আল মক্কা স্টোনক্রাসার মালিক সেলিম মাহবুব লিটুর সঙ্গে ব্যবসার জন্য পরিচয় করে দিয়েছিল। পরিচয়ের পর আমি সরল বিশ্বাসে ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য লিটুকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করি। আমার পুজিকৃত সেই অর্থ স্টোন ক্রাসার মালিক লিটু ও ফারুক আত্মসাৎ করে। লিটুর আত্মীয় ঝিনাইদহের রবিউল হক পাওনা টাকা উদ্ধার করে দেওয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা নিয়েছিল। সেটাও পাওয়া যায়নি।’ তিনি এই সন্ত্রাসী ও প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আত্মসাৎকৃত টাকা ও জমি উদ্ধারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।