বৃহত্তর সিলেটের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়
বৃহত্তর সিলেটের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে পাথর শ্রমিক বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন। সোমবার দুপুরে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা মো. জুলহাস উদ্দিন শিকদারের সভাপতিত্বে ও আন্দোলনের সদস্য সচিব সৈয়দ ফখরুল ইসলামের পরিচালনায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পাথর শ্রমিক বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক সাংবাদিক আবুল হোসেন।
তিনি বলেন, বৃহত্তর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলা সহ বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন পাথর ও বালু মহাল দীর্ঘ ৭ বছর ধরে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বৃহত্তর সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী ও বিভিন্ন বালু মহাল থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিন থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের প্রধানতম বারকী পেশায় সম্পৃক্ত দশ লক্ষাধিক মানুষ ও বিশ সহস্রাধিক ব্যবসায়ী আয়-রোজগার হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ইতিমধ্যে শত শত ব্যবসায়ী ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ঋনের বোঝা সইতে না পেরে ইতিমধ্যে আত্মহত্যা করেছে এবং অনেকে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় চটফট করছে। অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছেন। দিনমজুর শ্রমিকেরা তাদের কর্মসংস্থান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে পরিবার পরিজন পরিচালনা করছে। কিন্তু এলাকায় কাজকর্ম না থাকায় ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে হাজার হাজার শ্রমিক পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
তিনি ৫ দিনের মধ্যে পাথর কোয়ারী খুলে না দিলে শ্রমিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, তিন দিনের মধ্যে আটককৃত বারকি নৌকা ফেরত ও মামলা প্রত্যাহারের জন্য আসামী ২৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি পেশ, ৩ দিনের মধ্যে আটককৃত বারকি নৌকা ফেরত এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হলে ০১ নভেম্বর বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ, ০৩ নভেম্বর সিলেট ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক এবং সিলেট-জাফলং মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন। এরপরও যদি উপজেলা ও জেলা প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন না করেন তাহলে তারা পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময় ও গোলটেবিল বৈঠক করে ভোখানাঙ্গা মিছিল, মানববন্ধন, গণসমাবেশ, ইউএনও ও ডিসি অফিস ঘেরাও, আমরণ অনশন, ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ এবং সর্বশেষ স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি পালন করবেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাওলানা আব্দুর রহিম, ইয়াছিন আলী, জহিরুল ইসলাম, আজমল হোসেন, শাহাদত হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক বাদল, জাফলংয়ের বিশিষ্ট পাথর ব্যবসায়ী জুবায়ের আহমদ, নানু মিয়া চৌধুরী, সুমন আহমদ, রাহাদুজ্জামান, বিছনাকান্দির পাথর শ্রমিক নেতা আমির হোসেন, ছয়ফুল আলম, সিলেট জেলা যুব অধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি জুবায়ের আহমেদ তুফায়েল, কোম্পানীগঞ্জের শ্রমিক নেতা ফয়জুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, কালা মিয়া, সুরুজ মিয়া, বাসির মিয়া, ইদ্রিছ মিয়া, গণমাধ্যম কর্মী মঈন উদ্দিন মিলন, ছাত্রনেতা লিটন মিয়া, আরিফ আহমেদ সুমন, ইকবাল হোসেন ইমন প্রমুখ।