স্টাফ রিপোর্টার
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের রোষানলের শিকার হয়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ার অভিযোগ করেছেন সিলেট নগরীর লালাদিঘীর পশ্চিম পাড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম। রবিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুস সালাম বলেন, গত ৩০ মার্চ সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার এজাহারে বলা হয় আমি নাকি স্ত্রীকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে তানিয়া নামের একটি মেয়েকে ২২ দিন আটকে রেখে আমার নিজ বাসায় ধর্ষণ করেছি এবং পরবর্তী সময়ে একই এলাকার বাসিন্দা মনাফের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। তিনি বলেন, মামলায় যে ২২ দিন আটক রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেই সময় আমার ছেলের এসএসসি মডেল টেস্ট চলছিল। আমার বাড়িতে ২য় তলা ও নিচে ভাড়াটিয়া রয়েছে এবং আমার ঘরের পাশে আপন বড় ভাইয়ের ঘর রয়েছে। আমি চার সন্তানের জনক। এরকম ঘটনা করে থাকলে অবশ্যই আমার সন্তানদের ও প্রতিবেশীদের নজরে পড়তো।
আব্দুস সালাম বলেন, মূলত এই মামলা অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মামলায় যাকে ভিকটিম দেখানো হয়েছে তার সৎ মা ও বাবা মাটির কাজ করেন সেও বোতল ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তাকে দিয়ে আমাদের এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারাই আমাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে এই মামলা করান। ভিকটিম এর পরিবার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বস্তিতে বসবাস করতেন। মামলা করার পর পরই ওই নেতারাই তাদের লালাদিঘীর পাড় ১১ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে আসেন। নেতাদের উদ্দেশ্য ছিল আমি ও আমার পরিবারকে নিঃস্ব করে দেওয়া।
মিথ্যা অভিযোগে যে মামলা হয়েছে তার প্রমাণাদি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিকটিম ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে একমাস পর রিপোর্ট আসে। রিপোর্টে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায় নাই। আমি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য বলি। তদন্ত কর্মকর্তা মেডিকেলের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার একমাস পর আমাকে সাথে নিয়ে ঢাকা সিআইডি অফিসে গিয়ে সেখানে আমার ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়। দীর্ঘ তিনমাস পর ঢাকা সিআইডি থেকে রিপোর্ট আসে আমার সাথে উক্ত ভিকটিমের কোনো যৌন সম্পর্ক প্রমাণিত হয় নাই। এতেই প্রতীয়মান হয় যে আমি নির্দোষ ও ষড়যন্ত্রের শিকার।
আব্দুস সালাম বলেন, মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে রানা নামে তাদের এক আত্মীয় ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। মূলত রানা তাদের আত্মীয় নন, রানা লালাদিঘীর পাড়ের বাসিন্দা। সে ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। ভিকটিমের বাবাকে চড়থাপ্পর মেরে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে লালাদিঘীরপাড়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে নিয়ে যায় এবং তাদের কু-পরামর্শে এ মিথ্যাচার করা হয়। এ বিষয়ে আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে।
আব্দুস সালাম বলেন, এই মামলায় আমার ভাতিজা মনাফকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। মনাফ সিলেট সিটি করপোরেশনের ১ম শ্রেণির একজন ঠিকাদার। আমারা মূলত এলাকার আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের চক্রান্তের শিকার।