হাজতিদের ডান্ডাবেড়ি-হাতকড়া পরানোর নীতিমালা করতে কমিটি গঠনে হাইকোর্টের রুল

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
হাজতিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, পুলিশের আইজি, কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং শরীয়তপুরের পালং থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এর আগে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। যিনি বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব পদে রয়েছেন।
গত ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়লেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম।
মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন তিনি।
১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শরীয়তপুরে হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নিলেন সেলিম রেজা নামে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খোলা হয়নি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে সেলিম রেজা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক।
গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের ছিলেন।
আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, এ দুটি ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ সালের। এটার পরিবর্তন দরকার। এ কারণে জনস্বার্থে রিট করি। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।
রুলে প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪ ও জেল কোডের স্বেচ্ছাচারী এবং অযৌক্তিক ব্যবহার করে সাধারণ কয়েদিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় গাজীপুর ও শরীয়তপুরের দুই ব্যক্তিকে অমানবিকভাবে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোয় কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠনে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।