সিলেটে বৃক্ষমেলায় চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

19

মো. আব্দুল হাছিব
নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ৩১শে আগষ্ট থেকে শুরু হওয়া বৃক্ষমেলা এখনও জমে উঠেনি। সিলেটে কয়েক দফা বন্যা, বৃষ্টিপাত, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সময়মতো মেলার আয়োজন না হওয়াসহ বিবিধ কারণে মেলা জমে উঠেনি বলে ব্যবসায়ীরা জানান। রবিবার সরেজমিনে মেলায় গেলে দেখা যায়, এবারের বৃক্ষমেলা জমে না উঠলেও অভিযোগ উঠেছে কয়েক লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়ের।
সিলেট বন বিভাগের উদ্যোগে ও সিলেট জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নগরীর সিলেট এগ্রো হাউজ, এগ্রোসিল নার্সারি, অর্কিড নার্সারি, সিলেট নার্সারি, জননী নার্সারি, শামিম নার্সারি, আবজল নার্সারি, সুগন্ধা নার্সারি, আলিফ নার্সারি, সবুজ বন নার্সারি, জালালিয়া নার্সারি, আনন্দ নার্সারি, নুরে মদিনা নার্সারি, এগ্রো সার্ভিস সেন্টার, শ্যামল উদ্যান নার্সারি, ভাই ভাই নার্সারি, তানজিলা নার্সারি, সোহান নার্সারি, জেএম ট্রফিক্যাল ফুড পার্কসহ ২১টি নার্সারির অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে এই বৃক্ষমেলা। যা শেষ হবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর।
প্রতিদিনই সিলেট বন বিভাগের উচ্চ পদস্থ কোনো না কোনো কর্মকর্তা সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলায় দায়িত্ব পালন করে থাকেন। রবিবারে সুনামগঞ্জের ফরেস্টার মোহাম্মদ দীন ইসলামকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
বৃক্ষমেলায় ঘুরে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন জনের সাথে আলাপকালে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বন বিভাগসূত্রে জানা গেছে, বৃক্ষমেলা উপলক্ষে সিলেট জেলা প্রশাসককে আহŸায়ক ও প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবিরকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কাছে মেলা আয়োজনের জন্য সরকারি বরাদ্দ এসেছে ২লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। তাছাড়া বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন ও এনজিও সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন এবারের বৃক্ষমেলায় সহযোগিতা করছে। সিলেট বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, মেলা আয়োজন করতে গিয়ে বিভিন্ন কারণে কয়েকবার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। বন বিভাগের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চাঁদা আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ফ্রি স্টলসহ সকল সুযোগ সুবিধা তৈরি করে দিয়েছি। আমরা কাউকে টাকার জন্য পত্র প্রেরণ বা স্টল পাওয়া নার্সারি থেকে কোনো প্রকার টাকা আদায় করিনি।
এদিকে বৃক্ষমেলায় সরেজমিনে গিয়ে বন বিভাগের প্রধানের বক্তব্যের ঠিক উল্টো তথ্য পাওয়া গেছে। মেলায় স্টলগুলো থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, সিলেট নার্সারি মালিক সমিতি প্রায় ৩ লক্ষ টাকার উপরে চাঁদা আদায় করেছে। সোহান নার্সারির মোহাম্মদ মিলন বলেন, আমি ১২ হাজার টাকা দিয়ে স্টল নিয়েছি। নুরে মদিনা নার্সারির মালিক মিজানুর রহমান স্টল বাবৎ ২০ হাজার টাকা, সবুজ বন নার্সারির মালিক ইমন আহমদ শিফাত ১৫ হাজার টাকা, আলিফ নার্সারি ১০ হাজার টাকা, অর্কিড নার্সারির মালিক ১০ হাজার টাকাসহ এভাবে প্রতিটি নার্সারি থেকে বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করেছে সিলেট নার্সারি মালিক সমিতি। সিলেট বন বিভাগের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত বৃক্ষমেলায় কেন চাঁদা আদায় করা হচ্ছে জানতে চাইলে সিলেট নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি ও এগ্রোসিল নার্সারির মালিক আলমগীর হোসেন জানান আমাদের ব্যবস্থাপনার খরচ রয়েছে। স্টল বাবদ টাকাগুলো ব্যবস্থা খরচ হিসেবে নেয়া হয়েছে। মূলত ব্যবস্থাপনার উল্লেখযোগ্য কোনো খরচের খাত তিনি এসময় দেখাতে বা বলতে পারেননি।