মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এক পরিবারকে সমাজচ্যুত করা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি গ্রামে।
জানাগেছে, শ্রীরামসি গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইসমাইল আলী ও আফতাব আলী কয়েস এর বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের আনার মিয়ার পরিবার বসবাস করছেন। নানা কারণে ওই পরিবারের প্রতি গ্রামের মানুষজন ক্ষুব্দ হয়ে উঠেন। অবশেষে ওই পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছেন সমাজপতিরা বলে গত ৩০ জুন ভ‚ক্তভোগী আনার মিয়া জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জগন্নাথপুর থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে সায়েক মিয়া, ইউপি সদস্য মাহবুব হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন সহ ১০ জন সমাজপতির নাম উল্লেখ সহ আরো নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২ জুলাই মঙ্গলবার জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সরেজমিনে ভ‚ক্তভোগী আনার মিয়া বলেন, আমরা কোন খারাপ কাজ করিনি। আমার ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে ছিল। ঘটনাটি সমাধান হয়ে গেছে। এ ঘটনায় সমাজের মানুষ আমাদেরকে সমাজচ্যুত (পাঁচের বাদ) দিয়েছেন। আমরা এখন নানা কষ্ট ও ভয়ে আছি। প্রবাসী ইসমাইল আলী ও আফতাব আলী কয়েস জানান, আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকাররা কোন খারাপ কাজ করেনি। যদি কিছু করে আমাদেরকে জানানো উচিত। আমাদের না জানিয়ে তাদেরকে সমাজচ্যুত করা বা বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার চাপ সৃষ্টি করা রাইট নয়। তা হিউম্যান রাইটস বিরোধী। যা কোন অবস্থায় মেনে নেয়া যায় না।
এদিকে-অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আনার মিয়ার পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করতে গ্রামবাসীদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চেরাগ আলী, দুদু মিয়া, সিরাজ আলী, জিলু মিয়া, সায়েক মিয়া, আ.শহীদ, ইউপি সদস্য মাহবুব হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন, প্রবাসী আক্তার হোসেন টিটু সহ গ্রামের অসংখ্য মানুষ বলেন, আনার মিয়া এই এলাকার বাসিন্দা নয়। তারা বহিরাগত। প্রবাসীদের বাড়িতে থেকে নানা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। এতে আমাদের গ্রামের বদনাম হচ্ছে। তাই তাদেরকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। এটি সমাজচ্যুত নয়। মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। প্রশাসনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এতে আমার সহযোগিতা চাইলে করবো। জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, এখানে বিরোধ আছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয়, সেদিকে নজর রয়েছে।