স্পোর্টস ডেস্ক :
বসুন্ধরা সিমেন্ট বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার পাঁচ ম্যাচ সিরিজে আগেই দুই ম্যাচ জেতা টাইগাররা নিজেদের তৃতীয় ম্যাচেও জয় পেল। ফলে, ৩-০তে এগিয়ে সিরিজটি নিজেদের করে নিল মাশরাফি বাহিনী।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠে এনামুল হক বিজয়ের হাতে। পুরস্কার বিতরণ করেন বসুন্ধরা গ্র“পের চেয়ারম্যানের প্রধান উপদেষ্টা মাহাবুব মোর্শেদ হাসান।
আরাফাত সানির ক্যারিয়ার সেরা বোলিং আর এনামুল হক বিজয়ের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে টাইগাররা জয় পেল ১২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। জিম্বাবুয়েকে ৩৯.৫ ওভারে ১৭৩ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে টাইগাররা।
এর আগে টাইগারদের দেওয়া ২৯৮ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে ব্যাটিংয়ে নামে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন হ্যামিলটন মাসাকাদজা এবং ভুসি সিবান্দা। বাংলাদেশের সেরা পেসার মাশরাফির করা তৃতীয় ওভারে আরাফাত সানির হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন ভুসি সিবান্দা (৯ রান)।
সিবান্দাকে সাজঘরে ফেরানোর পর আবারো জিম্বাবুয়ের শিবিরে আঘাত হানেন মাশরাফি। এবারে তিনি ফেরান মাসাকাদজাকে। মাসাকাদজা উইকেটের পিছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন ব্যক্তিগত ১২ রানে।
এর পর রুবেল হোসেন জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার ভেঙে দিতে সাজঘরে ফেরান মারুমাকে। মিডঅনে মাশরাফির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ব্যক্তিগত ৮ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন মারুমা।
দলীয় ৩৯ রানে তিন উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন টেইলর এবং সলোমন মিরে। কিন্তু ১৮তম ওভারে মিরেকে মুশফিকের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান আরাফাত সানি। আর পরের ওভারে সাকিব এলবি’র ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ১৫৯ ওয়ানডে খেলা ব্রেন্ডন টেইলরকে। টেইলর আউট হওয়ার আগে করেন ২৮ রান।
দলীয় ৮২ রানের মাথায় টপ অর্ডারের পাঁচটি উইকেট ফেলে দিয়ে টাইগাররা ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নেয়। কিন্তু এরপরও ১৬৭ ম্যাচ খেলা চিগুম্বুরা এবং রেগিস চাকাবায়া দলের হাল ধরেন। ৩৭ রানের জুটি গড়ে মাহামুদুল্লাহর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন চাকাবায়া।
জিম্বাবুয়ের সপ্তম উইকেটটি তুলে নেন রুবেল হোসেন। নিজের দ্বিতীয় আর সফরকারীদের সপ্তম উইকেট নিতে রুবেল এলবি’র ফাঁদে ফেলেন পিটার মুরকে। ৩৬তম ওভারে আরাফাত সানি পর পর দুই বলে ফেরান মাদজিভা এবং পানিয়াঙ্গারাকে।
তবে, ১৬৭টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা জিম্বাবুয়ে দলপতি এলটন চিগুম্বুরা ৪৬ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
পাওয়ার প্লে’র দশ ওভারে সফরকারীরা তুলে ৪৯ রান। আর এ রান তুলতেই তারা খুঁইয়ে ফেলে তিন উইকেট। ৬১ বলে দলীয় অর্ধশতক আসে জিম্বাবুয়ের। আর ১৫ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭৭ রান। ২০ ওভার শেষে তারা ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৭ রান তোলে। ৩০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে তোলে ১২৫ রান।
এর আগে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা দলীয় ২৯৭ রান করে। ডানহাতি ওপেনার এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে ভর করে সফরকারীদের ২৯৮ রানের টার্গেট দেয় টাইগাররা।
বসুন্ধরা সিমেন্ট পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ের উদ্বোধন করতে আসেন স্বাগতিক ওপেনার তামিম ইকবাল এবং এনামুল হক বিজয়।
ব্যক্তিগত ৯৫ রান করে নিজের চতুর্থ শতক মিস করেন এনামুল। কামুনগোজির বল তুলে মারতে গিয়ে সিনঙ্গি মাসাকাদজার হাতে ধরা পড়েন এনামুল। বিদায় নেওয়ার আগে ডানহাতি এ স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান ১২০ বলে ৯টি চার মারেন। এছাড়া আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল করেন ৪০ রান।
এরপর দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বিদায় নেন সাকিব। এরপর ২২ বলে ৩৩ রান করে সাকিবের পথ ধরেন মুশফিক। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে ১৩ বল খেলে ২২ রান করে মাদজিভার বলে মারুমার হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন সাব্বির। মাহামুদুল্লাহ ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা। মিরপুর শেরে-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে থেকে মাঠে নামে টাইগাররা।
চট্রগ্রামে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছিল মাশরাফিরা। প্রথম ওয়ানডেতে ৮৭ রানে আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৮ রানের জয় নিয়ে সাগরিকার মিশন শেষ করে টাইগাররা।