স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সোমবার সকালে সিলেট জেলায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে আবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সিলেটঃ সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, সিলেটে গত দুই দিন বৃষ্টি না হলেও সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। আজ মঙ্গল ও বুধবার স্বাভাবিক বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে আর বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত দুই দিন বৃষ্টি না হওয়ায় জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছিল। তবে সেটি অনেকটা ধীরগতিতে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পানি ধীরগতিতে নামায় জেলার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি চারটি পয়েন্টে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে।
সিলেট পাউবো বলছে, সোমবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে অবস্থান করছিল। নদীর ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। আবার কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। অমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত থাকায় পানি ধীরগতিতে নামছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কমে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এদিকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লার জলাবদ্ধ অবস্থার উন্নতি হলেও সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আবার জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নগরীর মাছুদিঘীরপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঈদের পরদিন থেকে তাঁদের ঘরে প্রায় হাঁটুপানি ছিল। এরপর এক স্বজনের বাড়িতে তিন দিন অবস্থান করে ঘরে ফিরেছেন। এখন আবার জলাবদ্ধ অবস্থার সৃষ্টি হলে পরিবার নিয়ে আবার ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যা পরিস্থিতিতে জেলায় ৭২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। এর মধ্যে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ৩১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ওইদিন বিকেলের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সিলেট নগরীসহ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় ১৯ হাজার ৭৩৮ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা বিতরণ অব্যাহত আছে। আগামী কদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার নিচু এলাকার শতাধিক গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এরই মধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার পরিবার। দুই উপজেলার পাঁচ শতাধিক পরিবার পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দী মানুষগুলো। গেল সপ্তাহে কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দুই উপজেলার মাঝ দিয়ে বহমান কুশিয়ারা ও কালনী নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেমি: ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে গত দুই দিনে বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে পানি কমতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বানবাসীর মাঝে।
দিরাই ও শাল্লা উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা যায়, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে হাওরের পানি উপচে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দিরাই পৌরসদর ছাড়াও দুই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামেই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বানের পানিতে আক্রান্ত হয়েছে দুইশতাধিক মাছের খামার। পুকুর তলিয়ে ও স্রোতের টানে পুকুরের পাড় ভেঙে প্রায় সোয়া কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দিরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম জানান, এ পর্যন্ত বন্যায় ২০-২৫টি পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। তবে সঠিক তথ্য এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
শাল্লা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুদ জামান খান জানান, হাওরবেষ্টিত শাল্লা উপজেলায় ছোট বড় ৬২০টি পুকুর রয়েছে। অধিকাংশ মৌসুমি পুকুর, এর মধ্যে ২০০টি পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাচাই-বাচাই করে প্রায় ৮৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।
দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরার হোসেন জানান, কুলঞ্জ ইউনিয়নের তেতৈয়া, হাতিয়া, আকিলনগর কুলঞ্জ, সুরিয়ারপাড়, তারাপাশা, টংগর রাড়ইলসহ বিভিন্ন গ্রামে বন্যার পানি উঠেছে। হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সব ক’টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিন শতাধিক পরিবার উঠেছে।
জগদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন রশিদ লাবলু জানান, জগদল ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামেই বানের পানি উঠেছে। অধিকাংশ আক্রান্ত পরিবারের লোকজন তাদের গবাদিপশুগুলো নিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। এর মধ্যে পানিতে তলিয়ে যাওয়া বসতঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ৩০০ পরিবার।
মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে অপরিবর্তিত রয়েছে জেলার বন্যা পরিস্থিতি। হাকালুকি হাওর পারের বাসিন্দা ও কুশিয়ারা নদীর ডাইকের ভেতরে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি ঢল আর উজান থেকে নেমে আসা বানে উছলিয়ে উঠছে হাকালুকি হাওরের পানি। টইট¤ু^র হাওরে খেলা করছে উত্তাল ঢেউ। জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার অনেক গ্রামের রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে বাড়িঘর। মানুষজন ঘরে টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করে অনেকেই না পেরে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৬৯৬টি পরিবারের লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবি) এর তথ্য সূত্রে জানা গেছে, মনু ও ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করলেও গত শনিবার দুপুর পর্যন্ত কুশিয়ারানদীর পানি বিপদসীমার ০০.১৮ সেন্টিমিটার ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ২.৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা দুর্গতরা জানান, ঘরে কোমর সমান পানি। বাড়ি ঘরের নিরাপত্তার জন্য পুরুষরা বাড়িতেই থাকেন। মহিলাদের দূরবর্তী স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়েছেন। নিরুপায় হয়ে কোনো কোনো পরিবারের লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের বাসিন্দা রজত দাস বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে পানি বাড়তে শুরু করে। ক’দিন ধরে বসতভিটা তলিয়ে যায় পানির নিচে। আমরা নিরাপদ দূরত্বে চলে আসি বাড়িঘর ছেড়ে। নারী শিশুদের স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়েছি। বাড়ি ঘরের নিরাপত্তার জন্য রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। এলাকার অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফ উদ্দিন বলেন, জুড়ী উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের জাবদা গ্রামের আব্দুস সুবহান বলেন, হাকালুকি হাওরের বড় বড় ঢেউ খেলা করছে। ঢেউয়ের পানি বাড়িতে এসে আঘাত করছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ চলাচলেও কষ্টে আছে। গবাদি পশু নিয়ে অনেকে বিপাকে রয়েছেন। উঁচু স্থানের আশ্রয়ে রাখা হয়েছে গৃহপালিত গরু ছাগল। বানের পানিতে মাঠঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঘাস তৃণলতা জোগাড় করা যাচ্ছে না। এতে গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের চিক্কা গ্রামের মৎস্যজীবী মুহিদ মিয়া বলেন, কুশিয়ারা নদীর ডাইকের ভেতরে আমাদের বাড়ি। ৭-৮ দিন ধরে পানি বাড়তে থাকে। ভারী বর্ষণে ঈদের পর থেকে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করে। ঘরে এখন কোমর সমান পানি। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ বরশি, জাল, ঢরি দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চলতো আমাদের। এখন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। ঋণ করে সংসারের খরচ চলছে।
বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ২৫২টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০০টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। আমরা সাধ্যমতো তাদের ত্রাণ সরবরাহ করে যাচ্ছি।
জুড়ী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং বলেন, এই উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। জায়ফরনগর ও পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জুড়ীতে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ৭৫টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এই উপজেলায় ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৯১টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারা ডাইকের ভেতরের গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আমরা ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, মনু ও ধলাই নদীর পানি কমে যাচ্ছে। তবে কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি থেমে গেলে সব নদ-নদীর পানি কমে যাবে।
হবিগঞ্জঃ উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানাবৃষ্টিতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ১০টি পাকা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। নতুন করে দক্ষিণ কসবা গ্রামের পাকা সড়ক ভেঙে দ্রæত গতিতে বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। এতে পানিবন্ধী হয়ে পড়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ছুটছেন আশ্রয় কেন্দ্রে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র, ইনাতগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র ও দীঘলবাক ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া ও জেলা প্রশাসক জিলুফা সুলতানা। এ সময় তারা বন্যা কবলিতদের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এতে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের রাজনগর, উমরপুর, মোস্তফাপুর, দক্ষিণগ্রাম, পাঠানহাটি, মনসুরপুর, দরবেশপুর, দিঘীরপাড়, নোয়াগাঁও, চন্ডিপুর, প্রজাতপুর, লামলীপাড়, দীঘলবাক ইউনিয়নের রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, দুর্গাপুর, মথুরাপুর, হোসেনপুর, মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর, গালিমপুর, আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর, পারকুল, উমরপুর, দীঘর ব্রাহ্মণগ্রাম, বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের সোনাপুর, চরগাঁও, বড় ভাকৈর (পূর্ব), করগাঁও, কালিয়াভাঙ্গা, দেবপাড়া ও কুর্শি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ১০টি পাকা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। কুশিয়ারা নদী ঘেঁষা ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকের ঘরবাড়িতে প্রবেশ করেছে। ফলে মানবেতর অবস্থায় জীবনযাপন করছে সাধারণ মানুষ।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ অনুপ জানান, বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে। ১৪টি সরকারী বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রয়েছে, এরমধ্যে ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ইতিমধ্যে দেড় শতাধিক পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে ৫শ প্যাকেটের শুকনো খাবার বরাদ্দ হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জিলুফা সুলতানা বলেন, বন্যা কবলিত যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন, তাদের সবাইকে পর্যায়ক্রমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আমরা সবসময় বন্যার্ত মানুষের পাশে আছি।