কাজির বাজার ডেস্ক
তামাকের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের ১১ কোটি ৭২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাকজাত দ্রব্য সেবন করে, যা মোট জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৩ ভাগ। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বাড়িতে ৪ কোটি ১০ লাখ এবং গণপরিবহন ও জনসমাগস্থলে ক্ষতির শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ।
সম্প্রতি দেশের আটটি বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন ৪৫টি জেলায় পরিচালিত এক জরিপের ফল বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে ৯৪৪টি স্থানের ৮ হাজার ১৯টি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট ৪৫টি স্থানীয় সংগঠনের মাধ্যমে এই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
জরিপের তথ্যনুযায়ী, তামাকের নেশায় আসক্তদের অধিকাংশই তরুণ ও কিশোর বয়সে ধূমপান শুরু করে। এর পিছনে তামাকজাত দ্রব্যের বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের প্রভাব বেশি লক্ষ্যণীয়। এক্ষেত্রে সরকারের তামাক নীতি না থাকা এবং আইন অমান্যের প্রবণতাই দায়ী। তামাক কোম্পানিগুলো আইন অমান্য করে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিক্রেতাদেরকে উৎসাহিত করছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
জরিপের তথ্যে বলা হয়, দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণের সার্বিক চিত্র মোটেও আশানুরূপ নয়। বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজারটি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের চিত্র চিহ্নিত করা হয়েছে।
তামাক নিয়ন্ত্রণে ১০ দফা সুপারিশের পাশাপাশি সরকারের করণীয় প্রসঙ্গে জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি সায়মা ওয়াজেদ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশের দায়বদ্ধতা পূরণে আরও জোরালো ভ‚মিকা রাখা জরুরি। এছাড়া, ডাবিøউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) চুক্তি অনুযায়ী দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণে অগ্রণী ভ‚মিকা রাখতে হবে। এ অবস্থায় আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তা দেশের স্বাস্থ্যখাতের সামগ্রিক অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে।