চুনারুঘাট সংবাদদাতা
ফিলিং স্টেশনে গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় চুনারুঘাট উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা যাত্রীদের থেকে ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্যাস সংকটের অজুহাতে উপজেলার বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন অটোরিকশাচালকরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অটোরিকশায় যাতায়াত করে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন রুটে ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না অটোরিকশা চালকরা। হবিগঞ্জ থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া ৪০ টাকা। বর্তমানে নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। নতুন ব্রিজ থেকে চুনারুঘাট রুটে ভাড়া জনপ্রতি ২৫ টাকা। নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা করে। এ ছাড়া চুনারুঘাট থেকে আসামপাড়ার ৪০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা ও সুন্দরপুরের ২৫ টাকার ভাড়ার স্থলে ৩০ টাকা আদায় করছেন অটোরিকশা চালকরা।
সুমাইয়া নামে এক যাত্রী বলেন, তিনি সুন্দরপুর থেকে চুনারুঘাটে ২৫ টাকা দিয়ে অটোরিকশায় নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন। বর্তমানে অটোরিকশা চালকেরা যাত্রীদের থেকে ৩০ টাকা করে নিচ্ছেন। একই ধরনের অভিযোগ করেন আছমা নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, উপজেলার আসামপাড়া থেকে চুনারুঘাটে ৪০ টাকার ভাড়া, কিন্তু যাত্রীদের থেকে ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। শাহিন মিয়া নামে এক যাত্রী জানান, চুনারুঘাট থেকে শায়েস্তাগঞ্জের প্রকৃত ভাড়া ২৫ টাকা হলেও বর্তমানে ৩০ টাকা আদায় করছেন চালকরা।
যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় অটোরিকশা চালক রজব আলী জানান, হবিগঞ্জের মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জে সিএনজি স্টেশনে গ্যাস পাওয়া যায় না। এলপি গ্যাসে গাড়ি সিএনজির মতো একই সমান পথ চলে না। এজন্য যাত্রীদের থেকে সামান্য কিছু টাকা বাড়তি নিচ্ছেন তারা। চুনারুঘাট সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানো হয়নি। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় চালকদের কেউ কেউ হয়তো যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
ফিলিং স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন পরিবহন চালকরাও। জেলায় মাত্র দুটি- হবিগঞ্জ সদর ও মিরপুরে- গ্যাসের ফিলিং স্টেশন চালু রয়েছে। তবে এসব স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ লাইনে অপেক্ষায় থেকেও চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না গ্যাস। এতে গাড়ি সড়কে নামাতে পারছেন না অনেক চালক। অটোরিকশা চালক ফজর রহমান জানান, গ্যাস সংকটে তাদের স্ট্যান্ডের দেড় শতাধিক অটোরিকশা বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে তাদের অনাহারে থাকতে হবে। সিএনজি ফিলিং স্টেশন জিএস ব্রাদার্সের ম্যানেজার অপু ভট্টাচার্য জানান, গ্যাস কোম্পানি থেকে তাদের জন্য মাসিক নির্ধারিত বরাদ্দ শেষ হয়ে যাওয়ায় সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছিল। ইউএনও সিদ্ধার্থ ভৌমিক জানান, অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।