সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে সাত জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

8

স্টাফ রিপোর্টার
সিলেট নগরীতে একজন, গোলাপগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজন, কানাইঘাটে প্রবাসীর স্ত্রী, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে ডুবে এক শ্রমিক, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় বজ্রপাতে নারী-শিশু (চাচি-ভাতিজি) দুই জনের এবং গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর চেঙ্গেরখাল নদীতে পড়ে এক শিশুর মৃত্যুসহ মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিলেট নগরী: সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার রংমহল টাওয়ারের পাশে রাস্তায় একটি লাশ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লাশটি ৬০-৬৫ বছর বয়েসি একজন পুুরুষের। লাশ একটি মশারি দিয়ে ঢাকা ছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মারা যাওয়া লোকটি কয়েকদিন ধরে রংমহল টাওয়ারের আশপাশে ফুটপাতে অথবা রাস্তায় রাত কাটত। দেখতে মনে হয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন। বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে রাস্তার পাশে ওই ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেন।
সিলেট কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ওসামনী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
গোয়াইনঘাট: গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর চেঙ্গেরখাল নদীতে পড়ে সামির মিয়ার (১২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে চেঙ্গেরখাল নদীতে পড়ে বলে জানান তার স্বজনদেরা। সামির নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার নবীপুর গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ছেলে। মৃত্যু শিশুটির মামা মাসুদ জানান, প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার মাগরিবের নামাজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে চেঙ্গেরখাল নদীতে পাড়ে যায় শিশুটি। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন জাল দিয়ে চেঙ্গেরখাল নদীতে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় সামিরের লাশ উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নির্মল চন্দ্র দেব তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেন।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল ইসলাম বলেন, সালুটিকর এলাকায় চেঙ্গেরখাল নদীর পানিতে পড়ে একটি শিশু মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
গোলাপগঞ্জ: সিলেটের গোলাপগঞ্জে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মাজেদ আহমদ নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের করগাঁও গ্রামের (আদম পাড়া) আনা মিয়ার বাড়িতে রাজমিস্ত্রি কাজের সময় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত মাজেদ আহমদ লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের পূর্ব ফুলসাইন্দ গ্রামের রাজু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাজেদ আহমদ ওইদিন সন্ধ্যায় করগাঁও গ্রামের (আদম পাড়া) আনা মিয়ার বাড়িতে মিস্ত্রী কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যান। এসময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভাদেশ্বর কুশিয়ারা ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে।
কানাইঘাট: সিলেটের কানাইঘাটের ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী সজনা বেগমের (৩৫) মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে পিত্রালয়ের বসত ঘরের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত থাকা অবস্থায় সজনা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তী সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। সজনা বেগম বীরদল মাঝপাড়া গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী শরিফ উদ্দিনের স্ত্রী। তার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, স্বামী প্রবাসে থাকায় তাদের ৬ বছরের এক ছেলে ও ৪ বছরের এক মেয়েকে স্থানীয় এক কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষককে দিয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। এই সুবাদে সজনা বেগম পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে প্রবাসি স্বামী শরিফ উদ্দিনের সাথে তার মনোমালিন্য দেখা দেয়। এতে সংসারে অশান্তি দেখা দিলে সপ্তাহ দিন পূর্বে সজনা বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে তার পিত্রালয়ে চলে আসেন। এ ব্যাপারে নিহতের পিত্রালয় ও স্বামীর বাড়ির লোকজনদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।