হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
হবিগঞ্জ শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে বাচ্চা প্রসবের জন্য অপারেশন করে নারীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই অপারেশন করার অভিযোগ ওঠেছে। গত শনিবার ভারতের বেঙ্গালুরুতে মজুমদার শাহ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে স্মৃতি সূত্রধর নামে ওই নারীর পেটের ভেতর থেকে দুটি গজ বের করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। স্মৃতি সূত্রধর হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের স্বপন সূত্রধরের স্ত্রী।
জানা যায়, ৮ মাস পূর্বে হবিগঞ্জ শহরের সূর্যমূখী জেনারেল হাসপাতালে ডা. আরশাদ আলী নামে একজন চিকিৎসক ওই অপারেশন করেন। এরপর থেকে স্মৃতি সূত্রধর পেটে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। এরপর আবারো ওই হাসপাতালে গেলে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে পেটে টিউমার হয়েছে জানিয়ে আবারো অপারেশন করতে বলা হয়। কিন্তু এই হাসপাতালের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছিলেন না বলে সিলেটে আবারো আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। তাতে স্মৃতি সূত্রধরের পেটে বাড়তি কিছু থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।
স্মৃতি সূত্রধরের দেবর নয়ন সূত্রধর জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর প্রসব ব্যথা নিয়ে হবিগঞ্জ শহরের সূর্যমূখী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন স্মৃতি সূত্রধর। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন মোঃ আরশেদ আলী সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন স্মৃতি সূত্রধর। এর কয়েকদিন পর থেকেই পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করতে থাকেন তিনি।
নয়ন সূত্রধর জানান, পরবর্তীতে আমরা সূর্যমুখী জেনারেল হাসপাতালের উপর আর ভরসা না করে সিলেট শাহজালাল মেডিকেল সার্ভিসেস নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে স্মৃতি সূত্রধরের পেটে বাড়তি কিছু থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। অবশেষে শনিবার ভারতের বেঙ্গালুরুতে মজুমদার শাহ হাসপাতালে অপারেশন করে দুটি গজ বের করা হয়। তিনি বলেন, আমরা এ ঘটনায় জড়িত ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. আরশাদ আলী বলেন, তৃতীয় সিজার হওয়ার কারণে স্মৃতি সূত্রধরের অপারেশনটি জটিল ছিল। সিজারের পর তার সমস্যার বিষয়টি জানার পর আমরা তাকে চিকিৎসা দিতে চেয়েছি। কিন্তু আমাদের সাথে আর যোগাযোগ করেননি।
হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ নুরুল হক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে কোন অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।