শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথকে স্পর্শ করে আত্মা শুদ্ধ করবে ভক্তরা। তিনটি ফোল্ডিং রথ এর দড়ি টেনে নিয়ে যাচ্ছে নর-নারী, কিশোর-কিশোরী, যুবক বৃদ্ধসহ সকল বয়সের হাজার-হাজার ভক্ত। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘রথযাত্রার’ এ দৃশ্য দেখা গেছে মঙ্গলবার ইসকন সিলেট মন্দিরের রাস্তায়।
হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র এবং জয় জগন্নাথ জয় বলদেব, জয় সুভদ্রা মহারানী কি জয় ইত্যাদি ভক্তিমূলক ধ্বনি উচ্চারিত হয় সবার মুখে মুখে। কপালে তিলক দিয়ে শাড়ি, ধুতি, নানা রঙের পোশাকে সেজেছে পূণ্যার্থীরা। জগন্নাথকে উৎসর্গ করতে কিনে নিয়ে এসেছে কলা, আপেল, আম ও বিভিন্ন ধরণের ফল। ধীরে ধীরে এগুতে থাকে রথ। রথের সঙ্গে ভক্তরাও কীর্তন করে এগিয়ে যায়। সেই সঙ্গে এ উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে পুরো নগরীতে।
ইসকন সিলেট মন্দির থেকে শুরু হয়ে নগরীর রিকাবীবাজার, চৌহাট্টা, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, বন্দর, তালতলা, মির্জাজাঙ্গাল, রিকাবীবাজার রাস্তা প্রদক্ষিণ করে রথযাত্রাটি এগিয়ে পুনরায় ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হয়।
২৮ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে।
সকালে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ইসকন সিলেট মন্দিরে শুরু হয় রথযাত্রার অনুষ্ঠানমালা। এর মধ্যে ছিল হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।
এ উপলক্ষে দুপুরে ইসকন মন্দির প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও ইসকন সিলেটের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু শেখমুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, সিলেট সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেটের ডাকের বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রবীন পাল প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধন করেন সিলেটে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জয়শওয়াল। পরে এখান থেকে বর্ণাঢ্য সাজে তিনটি বিশাল রথে জগন্নাথ, শুভদ্রা ও বলরামের রথসহ বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইসকন মন্দিরে এসে শেষ হয়। বিজ্ঞপ্তি
জেএসসি-জেডিসি