সিন্টু রঞ্জন চন্দ
বছর ঘুরতেই সিলেটে ফের বন্যার আভাস দেখা দিয়েছে। ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি দ্রæত বাড়ছে। এ জন্য আগামী তিন দিনের মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা দেখা দিতে পারে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে।
এর আগে হঠাৎ বুধবার জ্যৈষ্ঠের শেষ দিনে সিলেটে নামে বজ্রসহ বৃষ্টি। মহানগরীতে দেখা দেয় জলমগ্ন ও জলাবদ্ধতা। আর বৃহস্পতিবার মাত্র ৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ভাসছে সিলেট নগরী-শহরতলীর রাস্তাঘাট-বাসা-বাড়ি ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। ড্রেন উপচে পানি উঠে গেছে বাসা-বাড়িতে। ফলে রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারে অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ে নগর কর্তৃপক্ষকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলোধুনো করেছেন সিলেটবাসী। যদিও বিকেলের দিকে বৃষ্টিপাত কমে আসলে খানিকটা স্বস্তি পান নগরবাসী। তবে বৃহস্পতিবার আষাঢ়ের প্রথম দিন ভোররাত থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বজ্রসহ বৃষ্টিপাতে আবারো প্লাবিত হয় নগরী। টানা বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। ড্রেনের পানি উঠে যায় বাসাবাড়িতে। ফলে অফিস-আদালতগামী লোকজন ও স্কুলগামী শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। অনেকে ময়লা পানি ডিঙিয়ে গন্তব্যে রওয়ানা হন ছাতা মাথায় দিয়েই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে বুধবারের মতো নগরীর বিভিন্ন রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়। জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বাসা বাড়িতে পানি উঠে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর আখালিয়া, পাঠানটুলা, মদীনা মার্কেট, বাগবাড়ি, কানিশাইল, শেখঘাট, ঘাসিটুলা, বেতবাজার, লালাদিঘীরপাড়, কুয়ারপাড়, তালতলা, হাওয়াপাড়া, সুবিদবাজার, জালালাবাদ, নগরীর দক্ষিণ সুরমা লাউয়াই, রেলগেইট, মুন্সিপাড়া, কেওয়াপাড়া, কাজলশাহ, পশ্চিম কাজলশাহ, মিরের ময়দানের বিভিন্ন এলাকা, শিবগঞ্জ, লামাপাড়া, পায়রা ও রাজারগলি, শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, তের রতনসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে।
আখালিয়া এলাকার তাইজুল ইসলাম, মুন্সিপাড়ার মতিন মিয়া, তের রতন এলাকার আবুল হাসেম, শাহজালাল উপশহর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমসহ নগরীর বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দুই মেয়াদে অন্তত ছড়াখাল ও ড্রেনেজ সংস্কারে হাজার কোটি টাকার কাজ হলেও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাননি নগরবাসী। যে কারণে অল্প বৃষ্টিতেই নগরীর রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। তাহলে ভরা বর্ষার মৌসুমের পুরো সময়ে তো নগরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী প্রকৌশলী শাহ মুহাম্মদ সজীব হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মোট ১০২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬০ সেন্টিমিটার এবং ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৪২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের দিন বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ২৭১ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সিলেটে মুষলধারে ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে টানা বৃষ্টিপাত হলে ভোটের নগরী সিলেটের অধিকাংশ স্থানে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় রাস্তাঘাট তলিয়ে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে মনে করছেন নগরবাসী।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, নগরীর ছড়াখাল পরিচ্ছন্ন রয়েছে। কেবল ড্রেনগুলোতে বাসা-বাড়ির ময়লা ফেলায় বৃষ্টির পানি নামতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তাই নগরীর বাসিন্দাদেরও যত্রতত্র ময়লা ও পলিথিন ফেলা থেকে সচেতন হতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র প্রতিবেদনের পূর্বাভাসে বলা হয়, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রæত বাড়ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উজানে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে এ অঞ্চলের নদ-নদীর (সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সারিগোয়াইন, ঝালুখালি, ভোগাই-কংশ, সোমেশ্বরী, যদুকাটা) পানি দ্রæত বাড়তে পারে এবং বিপৎসীমা পার হয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
বাড়ছে নদ-নদীর পানি: সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি বিপদসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদী ফুলে উঠছে। দুই দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানিতে যাদুকাটা, চলতি নদীসহ সুনামগঞ্জের সবকটি নদ-নদীর পানি কয়েক সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিপদসীমার ১.০১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রায় ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে হাওরগুলো এখনও পানিশূন্য থাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কম। এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যাদুকাটা নদীর পানি উপচে গতকালই সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের বিশ্বম্ভপুর শক্তিয়ার খলা ১০০ মিটার ডুবন্ত সড়কের উপর দিয়ে হাওরে যাচ্ছে পানি। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই এ সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও কোথাও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। আগামী কয়েক দিন সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বিপদসীমা অতিক্রম করবে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দিন ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বন্যার শঙ্কা: সিলেট বিভাগের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ আশঙ্কার কথা জানান। একইসঙ্গে তিনি বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি লেখেন, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলা ও মেঘালয় পর্বতের সীমান্তবর্তী স্থানে (চেরাপুঞ্জি নামক স্থানে) খুবই ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৪ জুন দুপুর পর্যন্ত। এরপর ১৪ জুন দিবাগত মধ্যরাতের পর থেকে বৃহস্পতিবার ১৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত আবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী স্থানের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হওয়ার প্রবল আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত ১০ দিনে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করছে আবহাওয়ার সব পূর্বাভাস মডেল। ২৫ জুন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলা ও মেঘালয় পর্বতের সীমান্তবর্তী স্থানে (চেরাপুঞ্জি নামক স্থানে) ১০০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে প্রধান-প্রধান আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলগুলো।
শেষে তিনি লেখেন, উপরের পূর্বাভাস সঠিক হলে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে একটি মাঝারি মানের বন্যার প্রবল আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে ১৬ জুন থেকে ২৫ জুনের মধ্যে।
পানিবন্দি ঘর বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সিলেট সদর উপজেলার সাহেবের বাজারে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বাজারতল গ্রামের অসংখ্য পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাদ যায়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। সাহেবের বাজার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের চিত্র একই। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় কলেজের মাঠ ও শ্রেনী কক্ষের ভিতর পানি ডুকে পড়লে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। বাধ্য হয়ে বুধবার কলেজ কর্তৃপক্ষ বন্ধ রাখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এ গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবারের দুর্ভোগের শেষ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্যে পানি ডুকে পড়ে। যার ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।
তাদের অভিযোগ, পানি যাতায়াতের ব্যবস্থা না রেখে যত্রতত্র ঘরবাড়ি অপরিকল্পিত ভাবে নির্মান করায় এ সমস্যা বেশী দেখা দিয়েছে। অল্প বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি হয়ে পড়েন এই গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। অচিরেই এ সমস্যা সমাধানের দাবী জানান সচেতন মহল। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাগব করতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের প্রতি আহবান জানান।
বাজারতল গ্রামের ভুক্তভোগী ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এস এম তারা মিয়া বলেন, হাতেগনা কয়েকজন ব্যক্তির জন্য আজকের এই সমস্যার মূল কারণ। তারা পরিকল্পিত ভাবে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে রেখেছেন, যে কারেণ আমরা আজ পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তিনি জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহলের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
সাহেবের বাজার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ দেবেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, বুধবার প্রতিষ্ঠানের শ্রেণী কক্ষের ভিতর পানি ডুকে যায়, কলেজে পরিক্ষা ছিল পরে পরীক্ষা স্থগিত করে, কর্তৃপকক্ষের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করি। বৃষ্টি হলেই এই প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করে। আশপাশের কালভার্ট বন্ধ হওয়ার কারণে এই সমস্যার দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ দিলোয়ার হোসেন জানান, রাজারতল গ্রামের কয়েকটি পরিবার পানিবন্দি হওয়ার খবর পেয়েছি। সাহেবের বাজার হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের যে পথটি আগে ছিল সেই পথটি এখন বন্ধ রয়েছে। যার জন্য এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি এলাকাবাসীর সাথে আলোচনায় বসেবা।
জেলা প্রশাসনের আগাম প্রস্তুতি: আগামী ১৫ দিন সিলেটে অতিবৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিলেটে হতে পারে বন্যা। এ পরিস্থিতিতে নগদ টাকাসহ ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করে রেখেছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত করা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টায় সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা’ শেষে এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন- সিলেটে গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পূর্বাভাস রয়েছে- আগামী ১৫ দিন সিলেটজুড়ে অতিবৃষ্টি হবে। এই কদিনে ১৪শ’ মিলিমিটারের বৃষ্টিপাত হতে পারে সিলেট জেলায়। ফলে সিলেটে বন্যা হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা হলে এর ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাই। এই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার জেলার সকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছি। সকলের কাছ থেকে নিজ নিজ উপজেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসক জানান- নদীসংবলিত উপজেলাগুলোর নদীতে গত কয়েকদিনে বেশ পানি বেড়েছে। তবে এখনো বিপদসীমার উপরে উঠেনি। তারা (নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান) জানিয়েছেন, নিজ নিজ উপজেলায় নগদ অর্থ ও চাল মওজুদ রয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। নতুন করে চাহিদা পাঠাতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনে পর্যাপ্ত চাল ও নগদ অর্থ মওজুদ রয়েছে। চাহিদামতো উপজেলাগুলোতে পাঠানো হবে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের অবস্থা বিবেচনায় দ্রæত সরিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকার জন্য সব উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
এক প্রশ্নের জবাবে মো. মজিবর রহমান জানান, গত বছরের বন্যার সময় তৈরি করা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে আবারও প্রস্তুত করা হবে। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রের তালিকা নতুন করে তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে সিলেট মহানগর এলাকায় নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের জন্য গতবারের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে কয়েকটি পরিবর্তন করা হতে পারে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, ৩-৪ লাখ টাকা করে স্টিলের দুটি বড় নৌকা ক্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। কারণ- গত বছরের দফায় দফায় বন্যায় বড় নৌকার অভাব প্রকট হয়ে দেখা দেয়। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় সিলেটে সিটি করপোরেশন, সিলেট মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশ, ফায়ার ও সিভিল ডিফেন্স এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।