সিলেটসহ ৫ সিটিতে বিএনপির কঠোর অবস্থান, কেউ অনড় কেউ দোটানায়

13

 

কাজির বাজার ডেস্ক

পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে কঠোর অবস্থানেই রয়েছে বিএনপি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি রয়েছে দলটির। এ পরিস্থিতির মধ্যে বিএনপি পদধারী নেতাদের কেউ কেউ এখনও অনড় অবস্থানেই রয়েছেন। আবার অনেকে পড়েছেন দোটানায়। উ™‚¢ত পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ দেখাতে সরকারের পক্ষ থেকেও বিএনপি নেতা ও ঘরানার ব্যক্তিদের উকিল আবদুস সাত্তার ‘মডেলের’ মতো প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে ‘উৎসাহিত’ করা হচ্ছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এ অবস্থায় সিটিগুলোর নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত প্রার্থিতা নিয়ে নাটকীয়তা চলার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
অবশ্য কৌশলে দলীয় সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে পদপদবি নেই, অথচ বিএনপি ঘরানার পরিচিত মুখ মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছেন গাজীপুর ও বরিশাল সিটিতে। গাজীপুরে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সরকার শাহনূর ইসলাম রনি। তিনি কারান্তরীণ বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিগত নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারেরও ভাতিজা। বরিশাল সিটিতে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রূপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র আহসান হাবীব কামালের ছেলে।
সিলেটে মেয়র প্রার্থিতার বিষয় এখনও স্পষ্ট করেননি বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। আগামী ২০ মে জনসভার মাধ্যেম নিজ অবস্থান ঘোষণা করবেন তিনি। অন্যদিকে রাজশাহী ও খুলনায় দলের কেউ প্রার্থী হচ্ছেন না বলে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিলেও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন না বলে জানিয়েছেন বিগত নির্বাচনে বিএনপিদলীয় মেয়র প্রার্থী ও দলের সাবেক খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
মেয়র প্রার্থী ছাড়াও এসব সিটিতে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা রয়েছেন সিদ্ধান্তহীনতায়। দলের সমর্থনের বাইরে গিয়ে কতটুকু সফল হবেন, তার হিসাব কষছেন অনেকে। তবে এলাকার আধিপত্য ধরে রাখতে রাজনৈতিক পদপদবির ঝুঁকি নিয়েই নির্বাচন করার প্রস্তুতি শুরু করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করাই এখন তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। এ পরিস্থিতিতে কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পাঁচ সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপির ভেতর দুটি মত রয়েছে। দলের তৃণমূল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে। আবার নির্বাচন বর্জনের পক্ষে দলের কেন্দ্রের একাংশ। এ পরিস্থিতিতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বর্জন এবং দলীয় কেউ প্রার্থী হলে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। বিশেষ করে মেয়র পদ দলীয় প্রতীকে হওয়ায় পদধারী কোনো নেতা প্রার্থী হলে চলমান আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন দলের হাইকমান্ড।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গত ২৭ এপ্রিল। খুলনা ও বরিশালে ১৬ মে এবং রাজশাহী ও সিলেটের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৩ মে। গাজীপুরে আগামী ২৫ মে, খুলনা ও বরিশালে ১২ জুন এবং রাজশাহী ও সিলেটে ২১ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।