রমজানে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ জরুরি

21

পবিত্র রমজান মাস আসার আগেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। আর এই পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার প্রতিবছর নানা রকম অঙ্গীকার-প্রতিশ্রæতি দিয়ে থাকে। কিন্তু বরাবরই দেখা গেছে, বাজার নিয়ন্ত্রণে আসে না। বাজারের নাটাই থাকে অশুভচক্রের হাতে। বিশেষ করে এবার ডলার সংকট এবং এলসি খোলায় নানা জটিলতার কারণে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। আগামী মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। পবিত্র এ মাস কেন্দ্র করে ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা, ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, খেজুরের মতো অনেক ভোগ্যপণ্যের চাহিদা আগেভাগেই কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এসব পণ্যের বেশিরভাগই আমদানিনির্ভর। তাই আমদানিও অনেক বৃদ্ধি পায়। এ বছর ডলার সংকট এবং এলসি (ঋণপত্র) খোলায় নানা জটিলতায় এসব পণ্য আমদানির পরিমাণ অনেক কমেছে। ফলে জোগান কম হওয়ায় দাম হবে ঊর্ধ্বমুখী।
রমজানে নিত্যপণ্য কিনতে এবার অনেক বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে সাধারণ ভোক্তাদের। বিশেষ করে এরই মধ্যে অস্থির হয়ে উঠেছে ছোলা, অ্যাংকরসহ মসুর ডালের বাজার। আমদানি কম দেখিয়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে ইতোমধ্যেই ছোলার দাম বেড়ে শতকের ঘরে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে গরিবের অ্যাংকর ডালের দামও বেড়ে ৭৫ টাকায় ঠেকেছে। ছোট দানার মসুরের দাম বেড়ে ১৪০ টাকা ছুঁয়েছে আগেই। বর্তমানে তেতে আছে মোটা দানার মসুরের বাজারও। এক কথায়, আসছে রমজানে নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত মূল্যের জন্য বাড়তি চাপে থাকতে হবে ভোক্তাদের।
বিগত বছরে দেখা গেছেÑ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির নানা কারণের মধ্যে অন্যতম দুর্বল বাজার মনিটরিং, অসাধু আমদানিকারক, উৎপাদক, পরিবেশক, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী, অকার্যকর টিসিবি, সর্বোপরি ট্যারিফ কমিশন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে আদৌ কোনো সমন্বয় না থাকা। এ কারণে ভোক্তা ও ক্রেতাস্বার্থ অধিকার এবং সংরক্ষণ বরাবরই উপেক্ষিত থেকে যায়। বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে সিন্ডিকেট তথা মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীচক্র। আসন্ন রোজার আগেই সব ধরনের নিত্যপণ্যের ন্যায্যমূল্য ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তাই বলব, বিগত দিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী দিনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পবিত্র রমজানে মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্যের যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ ক্ষেত্রে কঠোর মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হতে হবে বাজার মনিটরিং ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে।