কাজিরবাজার ডেস্ক :
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল আধিবেশনে জেলা নেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকার সাংগঠনিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। দলের প্রধানকে সামনে পেয়ে মনের কথা তুলে ধরেন তারা। এ সময় কারও কারও মুখে নিজের এলাকার অভ্যন্তরীন দ্ব›দ্ব-কলহের কথাও উঠে আসে। কয়েকজন সংগঠনের নিষ্কৃয়তার কথাও উল্লেখ করেন। তারা অনুযোগের স্বরে বলেন, দলের কেউ কেউ অন্তঃপ্রাণ হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন, আর কেউ কেউ দল বিক্রি করে খাচ্ছে। ‘নৌকা প্রতীক ভাড়ায়’ দেওয়ার কারণে কোনও কোনও এলাকায় সমহারে উন্নয়ন হচ্ছে না বলেও তারা অভিযোগ করেন।
কাউন্সিল অধিবেশন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের কাউন্সিল অধিবেশন হয়। এতে প্রতিটি জেলা থেকে একজন করে নেতা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান। জেলা পর্যায়ের নেতারা তাদের বক্তব্য দেওয়ার সময় তাদের এলাকার সাংগঠনিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। যেসব উপজেলা, পৌরসভার সম্মেলন হয়নি সেগুলো দ্রæত শেষ করার প্রতিশ্রæতি দেন। এ সময় দলের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন তারা।
বক্তব্য দেওয়ার সময় জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকিবিল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও জয়বাংলা খুঁজে পাওয়া যায় না। সরকারি অনুষ্ঠানে জয়বাংলা সেøাগান লেখা হয় না। নিমন্ত্রণপত্রে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপা হয় না।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বলেন, দেশি-বিদেশি চক্রের প্রচার সেল যতটা শক্ত, আমাদের প্রচার সেল ততটা শক্ত নয়। সরকারের উন্নয়ন প্রতিটি ওয়ার্ড ইউনিয়নে পৌঁছে দিতে পারলে বিনষ্টকারীদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যাবে।
সিলেট জেলার সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, সারা দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উন্নীত হয়েছে। আপনার নেতৃত্বে নতুন যে কমিটি আসবে তার প্রতি এখানকার সব কাউন্সিলরদের সমর্থন থাকবে। আপনার নির্দেশ মতো আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যাকে দায়িত্ব দেবেন তার সঙ্গে কাজ করবো।
তিনি বলেন, সারা দেশে বিএনপির অপপ্রচার ও কুৎসা রটনা চলছে। তার বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে হবে। এগুলো রুখে দিতে হবে। সিলেট জেলায় দলীয় কোনও কোন্দল ও দলাদলি নেই বলে দাবি করে সেখানে সহযোগী সংগঠনগুলোর গতি বৃদ্ধির কথা জানান তিনি।
সাবেক এই এমপি বলেন, সারাদেশে উন্নয়ন চলছে। কিন্তু সিলেটের বিশ্বনাথ এলাকা উন্নয়ন থেকে পেছনে আছে। কারণ আমাদের দলীয় এমপি নাই। এজন্য করজোড়ে অনুরোধ করছি। আগামী নির্বাচনে নৌকাকে যেন ভাড়া দেওয়া না হয়। নৌকার প্রার্থী আমরা চাই। যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে কাজ করবো।
বগুড়া জেলার সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হবে, সেই কমিটি আগামী এক বছরের মাথায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হবো। আশা করি আগামী নির্বাচনে বগুড়ায় আসন আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, ১৪ বছর ক্ষমতায়। আমরা অনেকে দলকে বুকে লালন করে চলছি। অনেকে আবার দল বিক্রি করে খাচ্ছি। আশা করবো দলকে যারা লালন করে, পালন করে আগামী নির্বাচনে তাদের মূল্যায়ন করবেন। আমরা মনে করি যড়যন্ত্রকারীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক আপনাদের দেশের জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
মুজিবুর রহমান বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম যেভাবে বিস্তৃত হওয়ার কথা, আপনি যেটা প্রত্যাশা করেন আমরা অনেকে হয়তো সেভাবে করি না। তৃণমূলে সহযোগী সংগঠনের র্কাযক্রম নেই বললেই চলে। এজন্য নতুন কমিটিকে আপনি একটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবেন।