বিশ্বমন্দার ঢেউ বাংলাদেশেও এসে পড়েছে। তাতে দেশের উন্নয়নকাজ যে একেবারে থেমে আছে, তা নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। নতুন প্রকল্প নেওয়ার ব্যাপারে গতি কিছুটা শ্লথ হলেও নিয়মিত কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বর্তমান সরকার সব সময় সচেষ্ট। বিশেষ করে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার সব সময় ইতিবাচক ভূমিকা রেখে এসেছে। এখনো রাখছে। কিন্তু এর পরও মাঝেমধ্যে কিছু খবর গণমাধ্যমে আসে, যেখানে দেখা যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তাঘাট বা গ্রামীণ অবকাঠামো অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোটি টাকা খরচ করে ব্রিজ তৈরি করা হলেও সেটি কোনো কাজে আসছে না একটি সংযোগ সড়কের অভাবে। আবার দেখা যায়, কোনো কোনো ব্রিজ সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। সামান্য সংস্কার করলেই এলাকার মানুষ নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে এমন অনেক ব্রিজ মেরামত হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিই পড়ছে না সেদিকে। এই ধরনের একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকে।
‘ঝুঁকিপূর্ণ ৩০ সেতু, ভেঙেছে পাঁচটি’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বরগুনার আমতলীতে মাঝ বরাবর দেবে গেছে তিনটি সেতু। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছয়টি গ্রাম। অন্যদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সাতটি লোহার সেতু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীতে ভেঙে পড়েছে পাঁচটি সেতু। সব মিলিয়ে ৩৫টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ৪২ হাজার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ভেঙে যাওয়া ওই লোহার সেতুগুলো মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
খবরে প্রকাশ, ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর খালে মুছুল্লিবাড়ীসংলগ্ন স্থানে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে লোহার সেতুটি নির্মাণ করে। ওই সময় ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় দুই বছরের মাথায় সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ২০১২ সালে মাঝখানের চারটি পিলারসহ সেতুটি দেবে পানির নিচে ডুবে যায়। ৯ বছর ধরে সেতুটির মধ্যাংশ পানির নিচে থাকলেও তা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে ২০১১ সালে চাওড়া খালের হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন ও চন্দ্রা গ্রামের মাঝখানে ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত লোহার সেতুটি চলতি বছরের মে মাসে ধসে পড়ে। এ ছাড়া আঠারোগাছিয়ার চাউলা বাজারসংলগ্ন যুগিয়া খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুর মধ্যে সিমেন্টের ঢালাই ধসে পড়ে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব সেতু মেরামত জরুরি হয়ে পড়েছে।
উপজেলা এলজিইডি বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ সাত লোহার সেতুর জায়গায় গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। দ্রুত কাজ শুরু হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।