আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস

17

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বৈশ্বিক নানা সংকটে কৃষিই বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। এর পেছনে রয়েছে দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো কোনো বছর ফসল উৎপাদন হোঁচট খেলেও দেশে ধারাবাহিকভাবে কৃষি উৎপাদন বেড়ে চলেছে। এই উৎপাদন বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে কৃষি খাতে নানামুখী সংস্কার এবং কৃষির উন্নয়নে নানাবিধ যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ। ফলে দেশের কৃষি ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষিতে আধুনিক, লাভজনক ও যান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ও প্রতিকূলতা সহিষ্ণু নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন ও প্রবর্তনের ফলে ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে। বিশেষ করে, খাদ্যশস্য, সবজি ও ফল উৎপাদনে এসেছে বৈচিত্র্য। কোভিড-১৯ অভিঘাত সত্ত্বেও দেশে কৃষির উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত থাকায়, শুধু খাদ্য নিরাপত্তাই নিশ্চিত হয়নি, অর্থনীতির ভিত্তিও শক্তিশালী থেকেছে।
তিন দফা বন্যা ও বর্ষায় বৃষ্টিহীনতার ধকল কাটিয়ে দেশের কৃষি খাত ঘুরে দাঁড়াতে গিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের কৃষিও নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও সারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি কৃষি খাতে এই চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। এতে কৃষি খাতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গিয়ে কৃষকের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ভাজ ফেলেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে গেছে।
এতে অস্বাভাবিক বেড়েছে সরকারের ভর্তুকি। তা সত্ত্বেও কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে শুধু ইউরিয়ার সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ালেও অন্যান্য সারের দাম অপরিবর্তিত রেখেছে।
আজ ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্ব খাদ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়। ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন।’ বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে গত ১৩ বছরে কৃষি খাতে সরকারের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কৃমিমুখী নীতির কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাঝেমধ্যে হোঁচট খেলেও গত ১৩ বছরে দেশে ধারাবাহিকভাবেই কৃষি খাতে উৎপাদন বড়েছে।
খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পরও উৎপাদন বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার মেট্রিক টন।
এ সময়ে চাল উৎপাদন বেড়েছে ২৯ শতাংশ, গম উৎপাদন বেড়েছে ৩৭ শতাংশ এবং ভুট্টা উৎপাদন বেড়েছে ৬৭১ শতাংশ। চাল উৎপাদন ৩ কোটি ১৩ লাখ ১৭ হাজার টন থেকে বেড়ে ৪ কোটি ৪ লাখ ৯১ হাজার টন হয়েছে। গম উৎপাদন ৮ লাখ ৪৯ হাজার টন থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৬৭ হাজার টন এবং ভুট্টা উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৩০ হাজার টন থেকে ৫৬ লাখ ৩০ হাজার টন।
এ ছাড়া অন্যান্য ফসল উৎপাদনেও ধারাবাহিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আলু উৎপাদন বেড়েছে ১১০ শতাংশ, ডাল উৎপাদন বেড়েছে ৩২৮ শতাংশ, তেলবীজ উৎপাদন বেড়েছে ৮৬ শতাংশ, সবজি উৎপাদন বেড়েছে ৬৪৫ শতাংশ এবং পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে ৩৯৫ শতাংশ।
বাংলাদেশের কৃষির এই উৎপাদন বৃদ্ধির সাফল্য বিশ্বেও সমাদৃত হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়, চা উৎপাদনে ৪র্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম স্থানে উঠে এসেছে।
কৃষির এই ফল বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে উচ্চ ফলনশীল জাত। গত ১৩ বছরে বৈরী পরিবেশ সহনশীল জাতসহ মোট ৬৯০টি উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবিত ও প্রবর্তিত হয়েছে। বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জাতসমূহের মধ্যে রয়েছে- লবণাক্ত সহনশীল ১৪টি, জলমগ্নতা সহনশীল ৬টি; জলমগ্নতা ও লবণাক্ত উভয় সহনশীল ২টি, খরা সহনশীল ১০টি, জোয়ার-ভাটা সহনশীল ৩টি, ঠা-া সহনশীল ৪টি, প্রিমিয়ার কোয়ালিটির ৭টি ও হাইব্রিড ধান ৬টি।
জনগণের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্বের প্রথম জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধান ব্রি ধান ৬২সহ ৭টি জিঙ্কসমৃদ্ধ জাত ও প্রিমিয়াম গুণসম্পন্ন রপ্তানিযোগ্য ১৩টি, এন্টি অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ধান, ডায়াবেটিক ধান এবং প্রো-ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইসের জাত উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিগত ১৩ বছরে কৃষি খাতের উন্নয়নে ৬৪২টি প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে, যা কৃষকের জন্য কৃষি কাজকে সহজ করে দিয়েছে ।
সরকারের পদক্ষেপসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সার ব্যবস্থাপনায় সংস্কার। সরকার ‘সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা ২০০৯’ প্রণয়নের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার করে। এতে কৃষকের দোরগোড়ায় সার প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং ভোগান্তির অবসান হয়।
কৃষকবান্ধব সরকার সারের আমদানি মূল্যের ওপর উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) প্রদান করে সুলভমূল্যে প্রতি কেজি টিএসপি ২২ টাকা, এমওপি ১৫ টাকা ও ডিএপি ১৬ টাকা ও ইউরিয়া ২২ টাকা দরে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করছে। ফলে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে সরকার কৃষিকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষকদের কৃষিযন্ত্রের ক্রয়মূল্যের ওপর ৫০-৭০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এতে কৃষক হ্রাসকৃত মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে পারছে। ২০১০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত কম্বাইন হারভেস্টর, রিপার, সিডার, পাওয়ার টিলারসহ প্রায় ৭২ হাজারটি কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।
এর ফলে কৃষি শ্রমিকের অপ্রতুলতা মোকাবিলা করা এবং উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পাচ্ছে। সেই সঙ্গে করোনাকালে হাওড় এলাকার শ্রমিক সংকট মোকাবিলা করে কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুত ফসল কেটে আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষা সম্ভব হয়েছে। কৃষির এই যান্ত্রিকীকরণের জন্য ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় ১২ ক্যাটাগরিতে ৫১ হাজার ৩০০টি কৃষিযন্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে।
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সেচ একটি অন্যতম উপকরণ। সরকার সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় নানামুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে খাল খনন, সেচনালা স্থাপন, রাবার ড্যাম নির্মাণ, সেচ অবকাঠামো উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, সেচ পাম্প স্থাপন, সেচ যন্ত্র বৈদ্যুতিকরণ, ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণ, সৌর চালিত সেচ যন্ত্র স্থাপনে উৎসাহ প্রদান প্রভৃতি।
দেশে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় ভরাশঙ্খ খালে এবং কক্সবাজার জেলার চকোরিয়ায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর দুইটি হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এর ফলে ওই এলাকায় অতিরিক্ত ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে।
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বিপণন। কৃষক পণ্য উৎপাদন করে তা বিক্র করতে না পারলে পুরো কৃষি ব্যবস্থাই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তাই সরকার কৃষককে পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণের জন্য কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নেও জোর দিয়েছে। উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণে বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করার জন্য মডেল হিসেবে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো সুবিধা নির্মাণ করা হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৪তলা বিশিষ্ট ১৪ হাজার বর্গফুট করে ৫টি জেলায় ৫টি অফিস কাম ট্রেনিং অ্যান্ড প্রসেসিং সেন্টার, গাবতলীতে ১টি সেন্ট্রাল মার্কেট, ২১টি পাইকারি বাজার, ৬০টি কৃষক বাজার, ২০টি এসেম্বলি সেন্টার, গৃহ পর্যায়ে ৪০টি আলু সংরক্ষণাগার। শাক-সবজি ফলমূল গৃহ পর্যায়ে দীর্ঘদিন সতেজ রাখার নিমিত্ত সিলেট বিভাগের ৪টি জেলায় ৩০টি জিরো এনার্জি কুল চেম্বার নির্মাণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া, কীটনাশকমুক্ত শাক-সবজির যোগান দিতে চালু করা হয়েছে ‘কৃষকের বাজার’। সারাদেশে বর্তমানে ৪১টি জেলায় কৃষকের বাজার স্থাপন করা হয়েছে। ফলে কৃষকগণ কৃষি পণ্যের উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছে।
কৃষিতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতি বছরই কৃষি ও পল্লীঋণ নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণের জন্য ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫ শত ১২ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৬ শত ৪০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ পেয়েছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরেও ২৩ লাখ ৫৫ হাজার জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিকে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৬ হাজার ২ শত ৫০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় কৃষি ঋণের সুদের হার হ্রাস করে ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ প্রদানের জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করা হয়।
মাঝে মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকের ফলন হানি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তণের কারণে ইদানীং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা বেড়ে গেছে। চলতি ২০২২ সালেই দেশে সিলেট ও রংপুর অঞ্চলে টানা তিন দফা বন্যার পর এ বছর পুরো বর্ষাই কেটেছে বৃষ্টিহীনতায়। ফলে বন্যায় বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বৃষ্টিহীনতায় দেশে আউশ ও আমন আবাদ ব্যাহত হয়েছে। তাই প্রাকৃতিক বিপযয়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার কৃষকদের প্রণোদনা ও কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বন্যা, খরা, শিলা বৃষ্টি, অতি বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, উজানের ঢল, পাহাড়ী ঢল ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ২০০৯ হতে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৩৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে ২ কোটি ২৩ লক্ষ ২১ হাজার জন কৃষক উপকৃত হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এ খাতে ৫শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
কৃষকের উৎপাদন খরচ নিম্নপর্যায়ে রাখতে সরকার সার, সেচকাজে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ও ইক্ষুচাষে উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) প্রদানের করে আসছে।
২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সার, বিদ্যুৎ ও ইক্ষু ইত্যাদি খাতে মোট ১০২ হাজার ৯ শত ১৭ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সময়ে ৩ কোটি ৪৫ লাথ ৫৩ হাজার টন ইউরিয়া, ৮৮ লাখ ৭ হাজার টন টিএসপি, ৯২ লাখ ৫৪ হাজার টন ডিএপি ও ৮৫ লাখ ৮১ হাজার টন এমওপি ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের প্রদান করা হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বর্তমান সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পুরনো কম উৎপাদনশীল ধানের জাত ব্রি ২৮ ও ২৯ এর পরিবর্তে উচ্চ উৎপাদনশীল নতুন জাত ব্রি ৮৮, ৮৯, ৯২ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর চাষ দ্রুত সম্প্রসারণে কাজ চলছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে ভবিষ্যতে দেশে আর কোনদিন খাদ্য সংকট হবে না।
তিনি বলেন, অল্প জমিতে সব আবাদ করতে গিয়ে ধানের জমি কমে যাচ্ছে। আবার ১৬ কোটি মানুষের দেশে অল্প জমিতে সব ফসল আবাদ সরকারের জন্য, আমাদের জন্য জাতি হিসেবে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। পৃথিবীর কোনো দেশে এই চ্যালেঞ্জ নেই। তা সত্ত্বেও দেশে ধারাবাহিকভাবে কৃষি উৎপাদন বেড়ে চলেছে।
এই উৎপাদন বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে কৃষি খাতে নানামুখী সংস্কার এবং যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ফলে দেশের কৃষি ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এটি সম্ভব হয়েছে কৃষি খাতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর দেয়ার কারণেই।