একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে নিজের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার জয়নাল আবেদীন (৪৯) নামের এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি গত মার্চে বাড়িতে আসেন। পরিবার ও স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জয়নালের করোনা ভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। সকালে হঠাৎ করে তাঁর পেট ব্যথা শুরু হয়। পরে হাসপাতালেনেওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান। তিনি মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জলালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পরিবার ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জয়নাল আবেদীন দুই বছর ওমানে ছিলেন। সর্বশেষ সেখানে দুই মাস জেলে থাকার পর গত ১৮ মার্চ তিনি দেশে আসেন। বাড়িতে আসার পর থেকে তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। গতকাল সকালে হঠাৎ করে তাঁর পেটে ব্যথা শুরু হয়। তাৎক্ষণিক গ্রামের একজন পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনেন পরিবারের লোকজন। পল্লী চিকিৎসক তাঁকে কিছু ওষুধ দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় তিনি মারা যান।
স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি স্বাস্থ্য সেবাপ্রদানকারী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বাড়িতে আসার পর থেকে জয়নাল আবেদীন তাঁদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন। তিনি কখনো কোনো সমস্যার কথা জানাননি। তিনিও সকালে খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান। এ সময় পেট ব্যথায় জয়নাল আবেদীন ছটফট করছিলেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান।
জয়নাল আবেদীনের বড় বোন মরিয়ম বিবি বলেন, তাঁর ভাইয়ের পেট ব্যথার সমস্যাটা অনেক পুরোনো। এর বাইরে সর্দি, জ্বর, কাশি বা অন্য কোনো সমস্যা ছিল না। তিনি সুস্থই ছিলেন।
মান্নারগাঁও ইউনিয়নে মোট চারজন প্রবাসী সম্প্রতি বিদেশ থেকে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং দুজন নারী। জয়নাল আবেদীন ছিলেন তাঁদের একজন। তিনি মারা যাওয়ায় বর্তমানে ইউনিয়নে তিনজন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়িতে যান। পরিবার, প্রতিবেশী ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। জয়নাল আবেদীনের করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ ছিল না বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন। সবকিছু শুনে ও দেখে তাঁদের মনে হয়েছে, জয়নাল হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনার উপসর্গ না থাকায় পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না।