কাজিরবাজার ডেস্ক :
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চালানো গণহত্যার স্বীকৃতি চেয়ে এবং এ জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। শুক্রবার ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা রোহিত খান্না এবং রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা স্টিভ শ্যাবট এই প্রস্তাব আনেন।
প্রস্তাব উত্থাপনের পর শুক্রবার এক টুইট বার্তায় স্টিভ শ্যাবট বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল- তা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। যারা এই নির্মম হত্যাকা-ের শিকার, তাদের স্মৃতি মুছে ফেলা সম্ভব নয়। এই হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে তা বিশ্ব ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে এবং আমেরিকানদের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের জনগণ এ থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারবে।
আরও একটি ব্যাপার হলো, ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে বিশ্বের যাবতীয় নিপীড়ক শক্তিকে আরও একবার এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে যে, এ ধরনের অপরাধ কখনো সহ্য করা বা ভুলে যাওয়ার মতো ব্যাপার নয়।’
স্টিভ শ্যাবট আরও বলেন, ‘আমি আমার বন্ধু আইনপ্রণেতা রো (রোহিত) খান্নার সহযোগিতায় কংগ্রেসে ১৯৭১ সালের ওই গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে এই রেজুলেশন উত্থাপন করেছি। আমরা চাই, ১৯৭১ সালে বর্তমান বাংলাদেশে যত বাঙালি হিন্দু ও মুসলিমকে হত্যা করেছে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী, তাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হোক এবং এই গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হোক।’
পৃথক এক টুইট বার্তায় রোহিত খান্না বলেন, ‘১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল। তাদের ৮০ শতাংশই ছিলেন হিন্দু। একাত্তরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনী যা করেছিল, পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যসব গণহত্যার মতো সেটিও স্পষ্ট গণহত্যা।’
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটি এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। ’৭১ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান সেলিম রেজা নূর বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমাদের দেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, আমরা তাতে সন্তুষ্ট।’
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ও ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার অ্যারোমা দত্ত পিটিআইকে বলেন, ‘আমার দাদা (পিতামহ) ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (৮৫) এবং আমার বাবা দিলীপ দত্তকে (৪০) বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল হানাদার বাহিনী। আমরা চাই, ’৭১ সালে যারা নিরপরাধ ও নিরস্ত্র লোকজনকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, অসহায় নারীদের ধর্ষণ করেছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’