কাজিরবাজার ডেস্ক :
তথ্যের অস্পষ্টতা এবং বিদ্যুতের খুচরা দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে দেওয়া চিঠির জবাব না পাওয়া বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বলছে, দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যথেষ্ট তথ্য হাজির করতে পারেনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে কমিশন বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর ওই ঘোষণা দেয়।
বিদ্যুতের বৃহৎ ক্রেতা হিসেবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ছাড়াও অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা- কোম্পানিগুলো ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি), ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট, (সিপিপি), কমার্শিয়াল পাওয়ার প্ল্যান্ট (সিওপিপি) এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ কিনে থাকে। এসব কেন্দ্রের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের কোনও তথ্য বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির শুনানির পর পিডিবি কমিশনে জমা দিতে পারেনি।
বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার পুনর্নির্ধারণের জন্য পিডিবি কমিশনে প্রস্তাব জমা দিলেও পিডিবিসহ অন্য কোনও বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা এবং কোম্পানি খুচরা বিদ্যুৎ মূল্যহার পুনর্নির্ধারণের কোনও আবেদন করেনি। ফলে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার পুনর্নির্ধারণের হলে ভোক্তাপর্যায়ে খুচরা বিদ্যুৎ মূল্যহারের প্রভাব পর্যালোচনা করা যায়নি।
কমিশন এ বিষয়ে বিদ্যুৎ সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে খুচরা মূল্যহার পুনর্নির্ধারণ ছাড়া পাইকারি মূল্যহারের কার্যকর বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, এমনকি পাইকারি মূল্যহার বাস্তবায়ন ও কার্যকর করা সম্ভব নাও হতে পারে মর্মে উল্লেখ করা হয়।
ওই চিঠির এখনও কোনও জবাব পায়নি কমিশন। এমনকি পিডিবির আবেদনে এবং শুনানিতে পাইকারি মূল্যহার পুনর্র্নিধারণের অনিবার্য প্রভাব, বিতরণ এবং ভোক্তাপর্যায়ে কিভাবে নিরসন করা হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্যও পাওয়া যায়নি। তারওপর তথ্যে অস্পষ্টতা থাকায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে পারেনি কমিশন।
কমিশন বলছে, তাদের এই আদেশের বিষয়ে কারও আপত্তি থাকলে তারা ৩০ দিনের মধ্যে কমিশনে রিভিউ আবেদন করতে পারেন।
এর আগে গত ১৮ মে পিডিবির বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করে কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির পর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। গণশুনানির ৯০ কার্যদিবসের সময়সীমা শেষ হবে ১৪ অক্টোবর। কিন্তু ১৪ অক্টোবর শুক্রবার হওয়ায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
গত ১৮ মে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য বাড়াতে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রায় ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদন করে পিডিবি। সে সময় ভর্তুকি ছাড়া ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানো এবং ভর্তুকি দিলে দাম না বাড়ানোর সুপারিশ করে বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।