কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এই পরীক্ষাকে সামনে রেখে প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যেকোনও গুজব প্রতিরোধে তৎপর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলো থেকে শুরু করে সব জায়গায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। এছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে আগে যারা গ্রেফতার হয়েছিল তাদের ওপরও রাখা হচ্ছে বিশেষ নজরদারি। একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শিক্ষার রূপরেখা-২০২১ এর অনলাইন প্রশিক্ষণ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের কোনও সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। কেউ প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ালে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেস থেকে প্রশ্ন বের হয়ে পরীক্ষার্থীদের হাতে না পৌঁছানো পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কেউ যেন তথ্য বাইরে দিতে না পারে সে বিষয়েও নজরদারি রয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি শুরু করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান- র্যাব। র্যাবের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রশ্নফাঁসে জড়িত কিংবা এমন কোনও ধরনের আলামত কারও কাছে পাওয়া গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। কোথাও প্রশ্নফাঁসের বিষয় নজরে এলে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, পরীক্ষার প্রশ্ন সাধারণত দু ভাগে ফাঁস হয়। একটি হচ্ছে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে। অন্যটি হচ্ছে পরীক্ষার শুরুর পরই প্রশ্ন বাইরে আসে। পরবর্তীতে প্রশ্ন সমাধান করে আবার সেই ডিভাইসেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যদিও দুটি মাধ্যমকে প্রশ্নফাঁসের জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যবহার করতে হয়। পরীক্ষা হলে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও কেউ যদি কোনও ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা হলে প্রবেশ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষকদের পাশাপাশি প্রভাবশালীদেরও এর সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনা আমরা দেখেছি। সব বিষয়ে মাথায় রেখেই এ বছর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যদিও প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যরা জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও একই কাজ করে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আগে থেকেই আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নজরদারি চলবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সবুর বলেন, এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে সব ধরনের নজরদারি আমরা বাড়িয়েছি। প্রশ্নপত্র ফাঁসে যারা আগে গ্রেফতার হয়েছিল তাদের ওপরও নজরদারি রাখা হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা যেন না ঘটে সে এ ব্যাপারে আমরা তৎপর।