টানা সাঁতরে ২৮১ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন ৭১ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। সোমবার সকাল ৬টায় সিলেটের ক্বীনব্রিজ চাঁদনিঘাট এলাকা থেকে শুরু করে সুরমা-কালনী হয়ে বিরামহীন সাঁতার কেটে ভৈরব ফেরিঘাটে গিয়ে শেষ হবে তার এ অভিযান। শনিবার দুপুরে সিলেট মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি নিজে। সর্বোচ্চ ৭০ ঘণ্টার মধ্যে দীর্ঘপথ অতিক্রম করার আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সাঁতার অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনটি নৌকাযোগে মুক্তিযোদ্ধারা তার পাশাপাশি থাকবেন, সঙ্গে থাকবে চিকিৎসার জন্য সিলেটের সরকারি মেডিকেল টিম ও নৌপুলিশের একটি দল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য-এর বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে। ১৯৫২ সালের ২৩ মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সিলেটের এমসি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে অনার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকরিতে যোগ দেন। অবসর গ্রহণের আগে তিনি বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-এর উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছেন।
শিক্ষা জীবন থেকেই সাঁতারের তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। তখন থেকেই ক্ষিতীন্দ্র বৈশ্য সাঁতার চালিয়ে গেছেন। তিনি ২০১৮ সালে নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদী থেকে সাঁতরে ৬০ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে ১৮৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন। এবার তিনি বিশ^রেকর্ড গড়তে তিনি সিলেট থেকে ২৮১ কিলোমিটার টানা সাঁতার কাটতে চান।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাঁতার শুরুর পর সার্বিক সহায়তায় করবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ড। পানি থাকাবস্থায় খাওয়া-দাওয়াসহ সব কাজ তিনি পানিতেই করবেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে সহায়তার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, নৌপুলিশ ও সিভিল সার্জনের পৃথক দল থাকবে। সাঁতার চলাকালে প্রতি দুই ঘন্টা পরপর শরীরিক পরীক্ষাসহ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ উদ্দিন আহমদ, রজনীকান্ত দাশ, রাকেশ সরকার, প্রীতি কুসুম চৌধুরী, অমলেন্দু দাশ, পান্না লাল রায় ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি