তাহিরপুরে হাওর বাওর নদী নালায় যত্রতত্র হেলে পরা বিদ্যুতের লাইন, ঘটছে দুর্ঘটনা

13

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
তাহিরপুরের হাওর বাওর নদী নালায় যত্র তত্র পল্লীবিদ্যুৎ লাইন। পানি থেকে ৫ ফুট কিংবা ৬ ফুট উচ্চতায় দীর্ঘ লাইন ছড়িয়ে রয়েছে উপজেলার সর্বত্রই। আর এ অবস্থায় চলমান বন্যায় নৌপথে চলাচল করতে গিয়ে বিদ্যুতের লাইনে ঘটছে দুর্ঘটনা।
বুধবার বিকেলে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামের পাশে বিদুতের তারে জড়িয়ে গ্রামের মোশাহিদ মিয়ার ছেলে মাকসুদ মিয়া (১০) গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে সে মারা যায়। একই সময়ে উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন এর মানিকখিলা গ্রাম থেকে গরুর খড়কুটো কিনতে বড়দল গ্রামের আসে রফিকুল ইসলামের ছেলে পারভেজ মিয়া (১১) তার ভাতিজা জিসান (১০)। সে সময় বড়দল গ্রামের রুহুল আমিন এর রাইস মিলের সামনে নদীর পাড়ে বিদ্যুতের ভাঙ্গা খুঁটির তাঁরে জড়িয়ে তারা দুজন গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে দুজন তাহিরপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উপজেলার সর্বত্রই যেভাবে বিদ্যুতের তাঁর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এ অবস্থায় সর্বত্র বিদ্যুৎ চালু করলে দুর্ঘটনা আরো বাড়তে পারে বলে স্থানীয়দের আশংকা।
শুধু স্থানীয় লোকজন নয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে ত্রাণ সরবরাহ করতে এসে নদী বা হাওরপথে চলাচল করতে গিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো চরম বিপাকের মধ্যে পড়েছে। রাতের বেলা বিদ্যুতের তাঁর অনেকক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না। অনেকটা ঝুঁকির মধ্যেই চলাচল করছে ত্রাণ দিতে আসা নৌকাগুলো।
মেঘদূত নৌকার মাঝি রতনশ্রী গ্রামের সইফুল মিয়া তিনি জানান, নদী পথে অনেকস্থানে পানি থেকে সামান্য উচ্চতায় বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। সেগুলোর নীচ দিয়ে কোন রকম পারাপার হওয়ায় যাচ্ছে। অনেক গ্রামের সামনে বিদ্যুতের তাঁর খুব নিচুতে ত্রাণ দিতে গিয়ে নৌকা গ্রামে ভেড়াতে হয়। সে সময় তারে নৌকা আটকে যায়।
উপজেলার মাড়ালা গ্রামের শামীম আহমেদ বলেন, হাওর বা নদীপথে চলাচল করতে গিয়ে এখন আতংক নিয়ে চলতে হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে অনেকে ত্রাণ দিতে নৌকা নিয়ে আসেন। যদি বিদ্যুতের লাইন চালু থাকে আর অনাকাঙ্কিত ভাবে তাড়ে জড়িয়ে যায় তাহলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তাহিরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাওরের ভাসমান পানির কারণে অনেক লাইন বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যে এলাকায় বিদ্যুৎ চালু রয়েছে সে সব এলাকার লোকজনদের বিভিন্ন ভাবে অবহিত করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম সুদীপ কুমার বিশ^াস বলেন, দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য আমার হাওরের অনেক লাইন বন্ধ করে দিয়েছি। বন্যার কারণে ভাসমান পানি। নদী পথে চলাচলে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলে তিনি জানান।