পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের শত্রু ॥ হাইকোর্ট বেঞ্চে মন্তব্য

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ। দেশের অহঙ্কার। এ ধরনের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তারা জাতির শত্রু, তাদের চিহ্নিত করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ষড়যন্ত্র না থাকলে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করল কেন?
পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানিকালে সোমবার বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
গত ২৫ জুন দুপুরে মাওয়া প্রান্তে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে দেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল জানান, পদ্মা সেতু নিয়ে জারি করা রুলের বিষয়টি গত ২৬ জুন আদালতে উপস্থাপন করার পর তা শুনানির জন্য সোমবার দিন নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট। নির্ধারিত ও ধার্য দিনে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার পরে আরও শুনানি ও আদেশের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট প্রশ্ন রেখে বলেন, ষড়যন্ত্র না হলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হলো কিভাবে? পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ ধরনের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে, তারা জাতির শত্রু, তাদের চিহ্নিত করা দরকার।’ পরে আদালত অধিকতর রুল শুনানি ও আদেশের জন্য আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) দিন ধার্য করেন।
পদ্মা সেতু নির্মাণের বিপক্ষে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে দৈনিক ইনকিলাবে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ইউনূসের বিচার দাবি : আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো একাট্টা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। একইসঙ্গে এ জাতীয় অন্যান্য দৈনিকের প্রতিবেদনেও শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসসহ অনেকের নাম উঠে আসে। সেসব প্রতিবেদন ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্ট পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে মিথ্যা গল্প সৃষ্টিকারী ও প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার জন্য কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে তাদের কেন বিচারের মুখোমুখি করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। মন্ত্রী পরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সচিব এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এ ছাড়াও ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে ‘ইনকোয়ারি এ্যাক্ট ১৯৬৫ (৩ ধারা)’ অনুসারে কমিশন বা কমিটি গঠন এবং এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা ৩০ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে মন্ত্রী পরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর কয়েকদফা সময় নেয়ার পরও কমিশন গঠন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। তবে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৯ নবেম্বর সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে কমিশনের সদস্য হিসেবে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (কারিগরি) মোঃ কামরুজ্জামানের নাম সুপারিশ করা হয়।