গোয়াইনঘাটে বধ্যভূমি চিহ্নিত করণ এবং সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন

18

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ণানগর গ্রামে পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাতে নির্মম নির্যাতনে মৃত্যুবরণকারী মুক্তিকামী ২৩ জন শহীদের গণকবর ও বধ্যভূমি চিহ্নিত করা এবং সংরক্ষণের দাবিতে সিলেটের গোয়াইনঘাটে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে গোয়াইনঘাট উপজেলা শহীদ মিনার চত্বর থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সন্তান কমান্ডের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল হক’র সভাপতিত্বে ও সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালিক, সন্তান কমান্ডের সভাপতি কামাল হোসেন, সহ-সভাপতি কামাল আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আহমদ প্রমুখ। এ সময় উপজেলার প্রায় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ডের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা হচ্ছে একটি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যুষিত উপজেলা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই উপজেলা থেকে ৮৩৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাদের জীবন বাজি রেখে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এ সময় অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের লোকজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে পাক হানাদার বাহিনী। যাদের উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গণকবর দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তামাবিল, আটলিহাই ও হাটগ্রামের গণকবর রক্ষণাবেক্ষণ করা হলেও স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আজও চিহ্নিত এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি গোয়াইন সেতু সংলগ্ন পূর্ণানগরের ২৩ জন শহীদের গণকবর। প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া এই গণ কবরটি চিহ্নিত করে এটি রক্ষণাবেক্ষণের জোড় দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে দূর্বার আন্দেলনে নামার হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
একই সঙ্গে তারা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে উপজেলার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একটি করে মোরাল নির্মাণ, উপজেলার হাটগ্রামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত গণকবরের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও তামাবিলের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবরটি আধুনিকায়নেরও দাবি জানিয়েছন।